নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বাংলাদেশ হয়ে রাজ্যে ঢুকছে বিষাক্ত চিনা রসুন! যা খেলে শরীরে নানা বিষাক্ত প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সেই রসুনের সন্ধানে বুধবার সকালে সিউড়ির সবজি বাজারের আড়তে হানা দিল জেলা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট বিভাগ। যদিও এখনও পর্যন্ত জেলায় সেই রসুনের সন্ধান মেলেনি।
দেখতে সাধারণ রসুনের মতো। চিনে উৎপাদিত রসুন বাংলাদেশ হয়ে চোরা পথে রাজ্যে ঢুকছে। নদিয়ার তেহট্ট বাজার থেকে মঙ্গলবার এক ক্যুইন্টাল এমন নিষিদ্ধ রসুন-সহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জেলা কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম খান জানান, "২০১৪ সালে চিন থেকে আমাদের দেশে রসুন আমদানি নিষিদ্ধ। চিনা রসুনে ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে মিথাইল ব্রোমাইড নামে ফাঙ্গিসাইড দেওয়া হয়। দশ বছর ধরে নিষিদ্ধ সেই রসুন ফের রাজ্যে ঢুকেছে বলে খবর।"
নিজস্ব চিত্র।
অন্যদিকে, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মিথাইল ব্রোমাইট পেটে গেলে যকৃৎ, কিডনি বিকল হতে পারে। স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিতে পারে। যদিও লিভার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী জানান, "অযথা আতঙ্ক ছড়িয়ে একে খুব গুরুত্ব দেওয়ার সময় এখনও আসেনি। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা প্রতিদিন খোলা বাজারে খাদ্য হিসাবে যা যা খায় সেক্ষেত্রেও সতর্কতা দরকার।"
সিউড়ির নেতাজি পাইকারি বাজারে বুধবার সকালে হানা দিয়ে এনফোর্সমেন্ট শাখার অফিসাররা কোথাও তেমন চিনা রসুন পায়নি। তবে এই হানা ও সতর্কীকরণে কাজ হবে বলে অনেকে মনে করছেন। পুলিশ জানিয়েছে, চিনা রসুন লালচে ধরনের হয়। কিন্তু সেটিকে রাসায়নিক স্প্রে করলেই সাদা অবিকল রসুনের মতো দেখতে লাগে। পাইকারি রসুন বিক্রেতা বেণু হাটি, শোভন চট্টোপাধ্যায়রা জানান, তাঁরা মুর্শিদাবাদের নাজির পুর থেকে ঘরোয়া রসুন কিনে এনে বাজারে বিক্রি করেন। তাই চিনা রসুন সম্বন্ধে তারা কিছু জানেন না। বাঁশঝোরের ওসমান গণী, শেখ সালামত জানান, "আমরা চিনা আর ভারতের রসুনের তফাৎ বুঝিনা। শুধু অনুরোধ আমাদের দয়া করে কেউ ঠকাবেন না। পুলিশ যেন লাগাতার এভাবে অভিযান চালিয়ে যায়।" এনফোর্সমেন্ট বিভাগের ডি এস পি স্বপন চক্রবর্ত্তী জানান, "নদিয়ায় এমন বিষাক্ত রসুন বাংলাদেশ হয়ে রাজ্যে ঢুকছে। আমাদের জেলায় ঢুকছে কি না জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে তার তল্লাশি শুরু হল। জেলাজুড়ে এই তল্লাশি চলবে।"