সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাণিজ্যের মোড়কে ‘সিপিইসি’ আসলে সামরিক বলয়। এই কথা ভারতের অজানা নয়। ফলে ‘চিন পাকিস্তান ইকোনোমিক করিডর’ বা ‘সিপিইসি’ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। সেই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে এবার মায়ানমারের সঙ্গে রেল সংযোগ তৈরি করছে চিন। ‘চিন মায়ানমার ইকোনমিক করিডর’ (সিএমইসি) প্রকল্পের আওতায় রেলপথ নির্মাণ করতে চলেছে বেজিং।
সাউথ ব্লক সূত্রে খবর, চিনের ইউনান প্রদেশের কুনমিং শহর থেকে মায়ানমারের দু’টি বন্দরে রেল সংযোগ গড়ার প্রকল্প নিয়েছে বেজিং। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই রেলপথ রাখাইন প্রদেশের সিতোই বন্দরের পাশ দিয়ে যাবে। ২০১৬ সালে বঙ্গোপসাগরের উপর এই বন্দরটি তৈরি করেছিল ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির অন্তর্গত মায়ানমারে কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দরটি নির্মাণ করে ভারত। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় সমীক্ষা করতে শুরু করেছে চিন।
[আরও পড়ুন: চিনা ‘ফাঁদে’ পা দিতে নারাজ মালয়েশিয়া, বেকায়দায় বেজিং]
বিদেশ মন্ত্রকের আশঙ্কা, রেল প্রকল্পের মাধ্যমে রাখাইন প্রদেশে ভারতীয় পরিকাঠামোর উপর নজর রাখাই বেজিংয়ের উদ্দেশ্য। শুধু নয়, ভবিষ্যতে মায়ানমারের অন্য বন্দরগুলিরও দখল নিতে চাইছে কম্যুনিস্ট দেশটি। উল্লেখ্য, চিনের ইউনান প্রদেশের সঙ্গে মায়ানমারের তিনটি প্রধান শহর- মান্দালয়, ইয়াঙ্গুন ও কায়াকফু শহরের সংযোগ করবে সিএমইসি।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্বের দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সংযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সিতোই বন্দর। বন্দরটির সঙ্গে মাল্টি মোডাল ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে মিজোরামকে। পাশাপাশি, ভারতের সঙ্গে থাইল্যান্ডের একটি সড়ক যোগাযোগ প্রকল্প শুরু হয়েছে মায়ানমারের উপর দিয়ে। ২০২০ সালে তার কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, শ্রীলঙ্কার মতোই মায়ানমারকে ঋণের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে চিন। ভারতকে সামরিকভাবে বেকায়দায় ফেলতেই এই চাল দিয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি। উল্লেখ্য, পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য চিনের থেকে বিশাল অঙ্কের ঋণ নেয় শ্রীলঙ্কা। তবে তা ফেরত দিতে না পেরে, হামবানটোটা বন্দর বেজিংয়ের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হয় কলম্বো। এবার মায়ানমারেও সেই ফাঁদ বিছিয়েছে লাল চিন। ভারতের সীমান্তের কাছে সেনাঘাঁটি তৈরি করাই ওই দেশের উদ্দেশ্য।
The post মায়ানমারে চিনা রেলপথ, ‘ড্রাগনের’ অভিসন্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত appeared first on Sangbad Pratidin.