সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে চিনের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান (Pakistan)। শুক্রবার বেজিংয়ে ‘চাইনা-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডর’ (CPEC) নিয়ে জিনপিং সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তিতে সই করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
[আরও পড়ুন: ‘মুসলিম গণহত্যাকারী’ চিনকে সমর্থন, তালিবানকে হুঁশিয়ারি দিল ইসলামিক স্টেট খোরাসান]
২০১৩ সালেই পাকিস্তানে পরিকাঠামো নির্মাণে উদ্যোগী হয়ে সিপিইসি প্রকল্প শুরু করে চিন। ওই প্রকল্পের অন্তর্গত তৈরি একটি সড়ক গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (PoK) মধ্যে দিয়ে। আর তাতেই ঘোর আপত্তি ভারতের। এহেন পদক্ষেপ দেশের সর্বভৌমত্বে আঘাত বলেই স্পষ্ট বয়ান নয়াদিল্লির। এই প্রেক্ষাপটেই এবার চিনের সঙ্গে সিপিইসি নিয়ে ‘ইনডাস্ট্রিয়াল কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট’ নামের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন ইমরান। বলা হচ্ছে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা হিসেবেই এই পদক্ষেপ।
শীতকালীন অলিম্পিক্স উপলক্ষে চারদিনের চিন সফরে এসেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার বেজিংয়ে অলিম্পিক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন ইমরান। বেজিংয়ে চিনের শীর্ষস্তরের আমলা, আধিকারিক ও মন্ত্রীদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চিনের প্রধান পরিকল্পনা কমিশনের (NDRC) চেয়ারম্যান হি লিফেং। ইমরান খানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য নিয়ে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয় লিফেংয়ের। সেই আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল পাকিস্তাকনে চিনা বিনীয় বৃদ্ধি করা। পাকিস্তানের রাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান মহম্মদ আজফার এহসান এবং হি লিফেংয়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্ত স্বাক্ষর হয়। তাতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলিতে শিল্প ও বাণিজ্যের উন্নতি, নতুন পরিকল্পনা তৈরি ও তার রূপায়ন, একাধিক প্রকল্পের তদারকি-সহ নানা বিষয়ে সমঝোতার কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতের বিরোধিতা সত্বেও সিপিইসি প্রকল্পের অন্তর্গত পাক অধিকৃত কাশ্মীর-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিন। তবে এই প্রকল্পের যে বিপুল খরচ তার ফলে ক্রমে বেজিংয়ের ঋণের বোঝায় চাপা পড়তে চলেছে ইসলামাবাদ বলেই মত বিশ্লেষকদের। আর সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয় তার প্রমাণও মিলেছে। গতবছর এক রিপোর্টে বলা হয়, চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্প থেকে বিপুল লাভ করতে চলেছে চিন। লাভের অঙ্ক নিয়ে পাকিস্তানকে বোকা বানাচ্ছে তারা। পাকিস্তানের শীর্ষ আমলারা এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি অডিট রিপোর্ট পেশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে। ২৭৮ পাতার ওই রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে রয়েছে চিনের প্রতি বিষোদ্গার।