সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত (India) থেকে আমদানি করা রেড়ির বীজ দিয়েই রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করছে চিন (China)। ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে এরকমই বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে।
[আরও পড়ুন: ফের ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের লক্ষ্যে ফ্রান্স! এবার চার্চের সামনে যাজককে গুলি আততায়ীর]
সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি রেড়ি বা ক্যাস্টর উৎপাদক দেশ হল ভারত। রেড়ির তেল বা ক্যাস্টর অয়েলের উৎপাদন, বিক্রি বেশি ভারতেই। কিন্তু রেড়ির বীজ খুব বিষাক্ত। জৈব আবর্জনা হিসাবে তা বিবেচিত হয়। মাত্র দু’একটি রোগের চিকিৎসার জন্য রেড়ির শক্ত বীজের গুঁড়ো বা পাউডার সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু আর তা কোনও কাজে লাগে না। তাছাড়া ছোট্ট এক চামচ এই বীজের পাউডার জলে গুলে খাইয়ে দিলে পূর্ণবয়স্ক মানুষের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যু হতে পারে। গত কয়েক মাস ধরে চিন সরকারিভাবে বিপুল পরিমাণে রেড়ির বীজ ভারত থেকে আমদানি করছে। এজন্য ক্যাস্টর সিড বা রেড়ির বীজ বরাত পাচ্ছে ভারতের বিভিন্ন সংস্থা।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, রেড়ির বীজে রয়েছে রিসিন নামের এক মারাত্মক বিষ ও যৌগ। এই রিসিন নামের যৌগটি নিষিদ্ধ ও ধ্বংসাত্মক রায়াসনিক মারণাস্ত্র তৈরিতে বা রায়াসনিক গ্যাস তৈরিতে ব্যবহার হয়। চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির নিজস্ব গবেষণাগারে তৈরি হচ্ছে এই রায়াসনিক অস্ত্র ও গ্যাস। সরাসরি যুদ্ধের রাস্তার না গিয়ে ভারত, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, জাপান, আমেরিকার মতো শত্রুদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র গোপনে ব্যবহার করার ছক কষছে চিন। সেজন্যই রেড়ির বীজ আমদানি করা হচ্ছে ভারত থেকে। এই ঘটনার জেরে সর্বভারতীয় বণিক সংগঠন ‘সলভেন্ট এক্সট্রাকটর অসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া’র সভাপতি অতুল চতুর্বেদী কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছে চিঠি লিখে আবেদন জানিয়েছেন, ‘এখনই রেড়ির বীজ চিনে রপ্তানি করা বন্ধ করুক ভারত সরকার। না হলে বিপদে পড়ব আমরাই। রপ্তানি বন্ধ হলে আমাদের আর্থিক ক্ষতি হবে ঠিকই। কিন্তু বড় বিপদ বা ফাঁদ থেকে রক্ষা পেতে পারি আমরা।’
ভারতীয় গোয়েন্দাদের মতে, নিশ্চিত খবরের ভিত্তিতেই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। কুইন্ট্যাল কুইন্ট্যাল রেড়ির বীজ আমদানি করা নিয়ে চিনের এত আগ্রহ প্রথম থেকেই সন্দেহজনক ছিল। জৈব রায়াসনিক মারণাস্ত্র তৈরিতে তা কাজে লাগাচ্ছে চিন। অতীতে আশির দশকে ইরাক ও ইরানের মধ্যে আট বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় ইরানের সেনাদের বিরুদ্ধে মাস্টার্ড গ্যাস ব্যবহার করেছিল ইরাক। সর্ষের বীজ থেকে তৈরি রায়াসনিক মাস্টার্ড গ্যাসে চোখ, মুখ ও গায়ে বড় বড় ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল ইরানি সেনাদের। অসুস্থ হয়ে পড়েছিল ইরানের সেনারা। সেরকমই চিনও জৈব মারণাস্ত্র বানাতেই রেড়ির বীজ আমদানি করছে। তাছাড়া মার্কিন গোয়েন্দারাও দাবি করেছেন, চিন গোপনে বায়ো টক্সিনস্ এলিমেন্টের স্টকপাইল বা জৈব বিষের সঞ্চয় বাড়াচ্ছে। এই প্রবণতা মারাত্মক।