সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইতিহাস গড়ল চিন (China)। শনিবার গভীর রাতে মঙ্গলপৃষ্ঠে (Mars) অবতরণ করল বেজিংয়ের মঙ্গলযান তিয়ানওয়েন-১ (Tianwen-1)-এর জুরং নামের রোভার। লাল গ্রহে তাদের প্রথম অভিযানেই এই সাফল্য নিঃসন্দেহে মহাকাশ অভিযানে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলির পাশেই বসিয়ে দিল চিনকে। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারি থেকেই মঙ্গলের কক্ষপথে পাক খাচ্ছে এই মহাকাশযান।
রোভারকে সঙ্গে করে তিয়ানওয়েন-১-এর ল্যান্ডারটি ‘আতঙ্কের সাত মিনিট’ কাটিয়ে নিরাপদে মঙ্গলের মাটিতে নেমে আসে একটি প্যারাশ্যুটে করে। পূর্ব নির্ধারিত ‘ইউটোপিয়া প্ল্যানিশিয়া’ অঞ্চলেই নেমেছে সেটি। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম শিনহুয়া নিউজ এজেন্সির কাছে অবতরণের খবরটিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে চিনের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’।
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় খোঁজ মিলল ভাল্লুকের ‘ডেরা’র! উৎসাহী বনকর্মীরা]
অন্তত ৯০টি মঙ্গল দিবসে সেখানে ঘুরে বেড়াবে জুরং। এই দীর্ঘ সময়ে নানা নমুনা সংগ্রহ করবে সেটি। খতিয়ে দেখবে মঙ্গলপৃষ্ঠের গঠন। করবে বরফের সন্ধান। যদি কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নজরে আসে তবে সেটিকে বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণও করবে জুরং। মঙ্গল অভিযান নিয়ে অত্যন্ত উচ্চাশা রয়েছে চিনের। দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার কর্তা চি ওয়াংয়ের দাবি, তাদের এই মিশনই এপর্যন্ত মঙ্গলে যত অভিযান হয়েছে, তার মধ্যে সেরা হতে চলেছে। সৌরজগতের চার নম্বর গ্রহের আবহাওয়া, ভূপৃষ্ঠ থেকে শুরু করে খুঁটিনাটি বিষয়ে তারা পর্যবেক্ষণ চালাবে বলে দাবি তাঁর। এর ফলে লাল গ্রহ সম্পর্কে আরও নতুন তথ্য জানা যাবে।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতেই মঙ্গলের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল তিয়ানওয়েন-১। ওই মাসেই মার্কিন ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর দু’টি মহাকাশযানও প্রবেশ করেছিল ওই কক্ষপথে। মার্কিন রোভার পারসিভিয়ারেন্সে (Perseverance) মঙ্গলের মাটিতে নানা কীর্তি গড়েছে। কিন্তু চিনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠিক ছিল, মাস তিনেক মঙ্গলের কক্ষে পাক খেতে খেতে এর রোভার আলাদা হয়ে গ্রহটির পৃষ্ঠে অবতরণ করবে।
আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মহাকাশ অভিযানে অনেকগুলি মাইল ফলক ছুঁতে চায় বেজিং। ইতিমধ্যেই মহাকাশে মানুষ পাঠানো, চাঁদে মহাকাশ অভিযানের মতো সাফল্য রয়েছে তাদের মুকুটে। এবার প্রথম অভিযানেই মঙ্গলের মাটিতে রোভারকে নামিয়ে কার্যত রাশিয়া ও আমেরিকাকে ‘মহাকাশ রেস’-এ জোর টক্কর দিল বেজিং।