সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াল চিন। বিদেশনীতিতে পরিবর্তন এনে এই প্রথম মায়ানমারের উপর চাপবৃদ্ধি করার ইঙ্গিত দিল বেজিং। রোহিঙ্গা ইস্যুতে গোড়া থেকেই মায়ানমারকে সমর্থন করে এসেছে চিন। বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকার উপর ভারতের প্রভাব খর্ব করতেই এই নীতি পরিবর্তন চিনের বলে মনে করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের (Bangladesh) মুক্তিযুদ্ধে চিনের ভুমিকা নেতিবাচক থাকলেও এখন ঢাকার মন জয় করতে মরিয়া কমিউনিস্ট দেশটি। ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মায়ানমারের পাশে থাকলেও এবার বিষয়টি নিয়ে ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে বেজিং। মায়ানমারে গৃহযুদ্ধের জেরে বাংলাদেশ সীমান্তে তৈরি অস্থিরতার বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেছে বিদেশমন্ত্রক। বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত বিদেশ সচিব মহম্মদ খোরশেদ আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে চিন সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। গতকাল, আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন চিনা রাষ্ট্রদূত।
[আরও পড়ুন: মায়ানমারে সংঘাতের আবহে বাংলাদেশের হাতে এল নতুন যুদ্ধবিমান]
এর আগে গত সপ্তাহে ঢাকায় কর্মরত বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিদেশমন্ত্রক। কিন্তু ওই ব্রিফিংয়ে চিনের প্রতিনিধি না আসায় সোমবার চিনা রাষ্ট্রদূতকে পৃথকভাবে ডেকে পাঠানো হয়। বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত বিদেশ সচিব মো. খোরশেদ আলম জানান, গত ব্রিফিংয়ে চিনের (China) প্রতিনিধি অনুপস্থিত ছিলেন। সে কারণে আজ তাকে অবহিত করা হয়েছে। আগের ব্রিফিংয়ে চিনের প্রতিনিধি কেন আসেননি জানতে চাইলে খোরশেদ আলম বলেন, “তাদের অবশ্যই কারণ ছিল। তবে আমরা বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছে এর ব্যাখ্যা চাই না।” পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার সঙ্গে চিন আগে থেকে ছিল এবং এটি যাতে আরও ত্বরান্বিত হয়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।”
বেজিং বাংলাদেশকে সহায়তা করবে কি না, এই বিষয়ে আলম বলেন, “তারা আমাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, যত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে তারা সহায়তা করবে। ঢাকার মূল লক্ষ্য হচ্ছে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করা। আগে চিন একটি উদ্যোগ নিয়েছিল। আমরা তাদের বলেছি তারা যেন আবার উদ্যোগ নেয়। রাখাইনে যুদ্ধ হচ্ছে, কিন্তু রোহিঙ্গাদের যে জায়গায় প্রত্যাবাসন করা হবে, সেখানে যুদ্ধ নেই।” এদিকে চিনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সাংবাদিকদের বলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, মায়ানমারে হিংসার কারণে বাংলাদেশে সৃষ্ট সমস্যার বিষয়টি বলা হয়েছে এবং এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।