অর্ণব আইচ: জনবহুল জায়গায় ওয়াইফাই ব্যবহারে ক্রমশ বাড়ছে বিপদ। সম্প্রতি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যের কয়েকটি জনবহুল এলাকার ওয়াইফাইয়ের ব্যবহারকারীর মধ্যে অন্তত ৭০ শতাংশ অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস অচেনা। ওই ‘জোন’ বা অঞ্চলগুলিতে পাক বা চিনা ওএস (Operating System) বা নিয়ন্ত্রক দ্বারা পরিচালিত মোবাইল ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর তা থেকেই বাড়ছে বিপদ। সম্প্রতি এই ব্যাপারে সাইবার বিশেষজ্ঞরা সমীক্ষা করে এই ‘ভয়াবহ’ তথ্য হাতে পেয়েছেন। এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশকেও সতর্ক করেছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বেশ কিছু জায়গায় বিনামূল্যে ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। কলকাতা ও কয়েকটি জেলার জনবহুল জায়গায় রয়েছে ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা। এ ছাড়াও রেল স্টেশন, বহু বাসস্ট্যান্ডেও এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। ওয়াইফাই যাঁরা ব্যবহার করছেন, তাঁদের তথ্য চুরির সম্ভাবনা থেকে যায়। কিন্তু পাল্টা বিপদ আসতে পারে যারা মোবাইল নিয়ন্ত্রক, তাদের দিক থেকেও।
[আরও পড়ুন: বয়স মাত্র ২৩! আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে ইতিহাস ভারতীয় বংশোদ্ভূত নাবিলা সইদের]
গোয়েন্দা পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অ্যাপেল ম্যাক, অ্যান্ড্রয়েড, মাইক্রোসফট উইনডোজ, অ্যাপেল আই-সহ কয়েকটি অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে, সাধারণভাবে যেগুলি মোবাইল ফোন নিয়ন্ত্রণ করে। এই মোবাইলগুলি যাঁরা ব্যবহার করছেন, তাঁদের শনাক্তকরণ সম্ভব। ফলে কেউ যদি মোবাইলে দেশবিরোধী বা নাশকতামূলক কিছু পোস্ট করে, সেই ক্ষেত্রে পুলিশ তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু অজ্ঞাত বা অপরিচিত অপারেটিং সিস্টেম বা ওএস ভিত্তিক মোবাইল যাঁরা ব্যবহার করেন, তাঁদের শনাক্তকরণ করা খুব একটা সহজ হয় না গোয়েন্দাদের পক্ষে।
কিন্তু সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে, জনবহুল এলাকায় যে ওয়াইফাই ব্যবহার হয়, তার কয়েকটিতে ৭০ শতাংশেরও বেশি অপরিচিত ওএস। ফলে গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই বিপুল সংখ্যার মোবাইল ব্যবহারকারীরা ব্যবহার করছেন চিনা মোবাইল। এ ছাড়াও অন্যান্য দেশ থেকে পাচার হওয়া মোবাইলও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। তাঁদের মতে, এখন একেকজন দু’টি বা অনেক সময় তার বেশি সংখ্যক মোবাইলও ব্যবহার করেন। অনেকেরই প্রবণতা থাকে, একটি দামী মোবাইল ও আরেকটি কম দামের মোবাইল ব্যবহার করার। সেই ক্ষেত্রে অনেকেই কম দামে চিনা মোবাইল বা অন্য দেশ থেকে পাচার হয়ে আসা সস্তার মোবাইল কেনেন। কিন্তু ওই মোবাইলের ওএস অ্যান্ড্রয়েড বা আইফোনের মতো পরিচিত না হওয়ার ফলে বিপদ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।
সম্প্রতি সল্টলেকে সাইবার সংক্রান্ত একটি সেমিনারে তথ্য প্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন দফতরের যুগ্ম সচিব সঞ্জয়কুমার দাশ সাইবার সচেতনতার বৃদ্ধির ব্যাপারে গুরুত্ব দেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে সাইবার স্বাস্থ্যবিধি বাড়ানোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সাইবার বিশেষজ্ঞ সত্যজিৎ চক্রবর্তী ও হৃত্বিক লাল।