সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মহলের চোখের আড়ালেই দক্ষিণ চিন সাগরে কার্যত নিরাপত্তার চক্রব্যূহ তৈরি করেছে চিন৷ সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনলেন মার্কিন বায়ুসেনা এক অফিসার৷ লেফটেন্যান্ট ডায়না কাউলিন জানান, কয়েক মাস আগে টহল দিতে দিতে দক্ষিণ চিন সাগরে মিসচিফ রিফের খুব কাছ পৌঁছে যান তিনি৷ তখনই বিমানের মধ্যে থাকা রেডিও সিস্টেমে ভেসে ওঠে বিকট একটি হুঁশিয়ারি৷ তিনি শোনের পরিষ্কার ইংরাজিতে কেউ তাঁকে হুমকি দিচ্ছেন৷
[আইএসআই-এর নির্দেশেই উপত্যকায় খুন তিন পুলিশ কর্মী!]
ওই হুমকি রেডিও বার্তায় ভেসে আসে, ‘আমাদের (চিন) সার্বভৌমত্বের উপরে হস্তক্ষেপ করছেন আপনি৷ আমাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে৷ এখনই এই স্থান ছেড়ে অনেক দূরে চলে যান৷ ফল ভাল হবে না৷’ লেফটেন্যান্ট ডায়না কাউলিন জানান যে, এই হুমকি বার্তা কে বা কারা পাঠিয়েছেন তা স্পষ্ট করে বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তবে এই দক্ষিণ চিন সাগরে বেজিংয়ের তৈরি করা নিরাপত্তা বলয় নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি৷ জিনপিং প্রশাসনের এই বাড়বাড়ন্ত চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে ট্রাম্প প্রশাসনের কপালে৷ ওই অঞ্চলে চিনের শক্তিবৃদ্ধি নিয়ে আমেরিকাকে সতর্ক করেছেন মার্কিন নৌসেনা অফিসার ফিলিপ ডেভিডশনও৷ তিনি জানান, এই বিশ্ববাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত এই পথকে এখন পুরোপুরি তাঁদের কব্জায় করে ফেলেছে লাল চিন৷ আন্তর্জাতিক মহলের অগোচরে ওই অঞ্চলে কার্যত চক্রব্যূহের সৃষ্টি করেছে তাঁরা৷ যা মার্কিন রেডিও সিস্টেমের ফ্রিকোয়েন্সিকেও হ্যাক করতে সক্ষম হচ্ছে৷ এবং দক্ষিণ চিন সাগরের বেশি কাছাকাছি গেলেই প্রতিপক্ষের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিচ্ছে৷
[বিশ্বের চতুর্থ ভয়ঙ্করতম উগ্রপন্থী সংগঠন মাওবাদী!]
দক্ষিণ চিন সাগরে তাদের আধিপত্যকে মজবুত করতে আগেই ওই অঞ্চলে ওয়াইজে-১২বি অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ মিসাইল এবং এইচকিউ-৮বি লঙ্গ রেঞ্জ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল বসায় চিন। দক্ষিণ চিন সাগরে অবস্থিত স্পার্টলি দ্বীপে প্রথম মিসাইল সিস্টেমটি বসানো হয়। এই স্পার্টলি দ্বীপকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি কর থাকে চিন। চিন জানায়, নিরাপত্তার কারণেই নিজেদের জমিতে সবকিছু করার অধিকার তাদের রয়েছে। তবে ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানের পক্ষ থেকেও এই দ্বীপকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করা হয়। তবে চিনের এবারের পদক্ষেপকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, এর মাধ্যমে বিশ্ব বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান যাত্রাপথে নজরদারি চালানোর ব্যবস্থা করল চিন।