shono
Advertisement

চকোলেট খেতে গিয়ে বিষম লেগে বিপত্তি, ‘হাইমলিখ’কৌশলে ছেলের প্রাণ বাঁচালেন মা!

কী এই হাইমলিখ পদ্ধতি, জেনে নিন।
Posted: 04:57 PM Feb 03, 2023Updated: 05:11 PM Feb 03, 2023

গৌতম ব্রহ্ম: স্কুল যাওয়ার জন্য মা তৈরি হচ্ছিলেন। বছর চারের ছেলে মনের আনন্দ কামড় বসাচ্ছিল চকোলেটে। ব্যস্ততার মধ্যেও মা খেয়াল করেন, ছেলে ছটফট করছে, মুখে শব্দ নেই কোনও। মায়ের মন ঠিক বুঝতে পারে, ছেলের বিপদ হয়েছে। চকোলেটের (Chocolate) টুকরো শ্বাসনালীতে আটকে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন মা। বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করে ছেলের প্রাণ বাঁচালেন মা। ছেলেকে সুস্থ করে মা বলছেন, কবেকার শেখা বিদ্যে এভাবে কাজে লাগবে, ভাবিনি!

Advertisement

গল্পটা এতক্ষণ শুনে কিছুই তেমন বোঝা গেল না তো? এবার তবে বিস্তারিত কাহিনি বলা যাক। বছর চারেকের ঋতধী পাল বাঁকুড়ার (Bankura) বাসিন্দা যূথিকা পালের ছেলে। তিনি বলেন, “স্কুল যাওয়ার আগে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেসময় ছেলে একটি চকলেট খাচ্ছিল। হঠাৎ দেখি, ঋতধী ছটফট করছে। মুখ দিয়ে কোনও আওয়াজ নেই। ছেলের এই অবস্থা দেখে আমি বুঝতে পারি, নিশ্চয়ই ওর শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে ওর নাভিমণ্ডলের উপরে চাপ তথা হাইমলিখ কৌশল প্রয়োগ করি। এবং বেশ কয়েকবারের প্রচেষ্টায় শ্বাসরোধ ঘটানো চকোলেটের টুকরোটি বেরিয়ে আসে।”

[আরও পড়ুন: আরও ধনহীন গৌতম আদানি, ছিটকে গেলেন বিশ্বের ধনীতম ২০ জনের তালিকা থেকেও]

ভারতের বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌম্য সেনগুপ্ত বলেন, “শ্বাসনালীতে খাবার আটকে যাওয়াকে আমরা চলিত ভাষায় বিষম লাগা বলি। সেই অবস্থায় মানুষ কথা বলতে পারে না। ফলে অন্যকে নিজের কষ্টের কথা জানাতে পারে না। যদি মানুষটি কেশে সেই বস্তুটি নিজে বের করতে পারেন, তাহলে ঠিক আছে নইলে সেই সময় নিজেকে বা অন্যকে বাঁচানোর জন্য সময় পাওয়া যায় মাত্র মিনিট চারেক। সেই সময়ের মধ্যে শ্বাসরোধ ঘটানো বস্তুটি বের করা যায় হাইমলিখ কৌশল প্রয়োগ করে।”

হাইমলিখ কৌশল (Heimlich) কী? মাংসের হাড় থেকে মজ্জা চুষে খেতে গেলে কিংবা হাসতে হাসতে খেলে বা কথা বলতে বলতে খাওয়ার সময় শ্বাসনালীর মধ্যে খাবার বা কঠিন বস্তু ঢুকে গেলে শ্বাসনালীর বেশি সংকুচিত হয়ে শ্বাসনালীর পথ বন্ধ করে দেয়। একে বলে ‘চোকিং’ (Choking)। এর মূল লক্ষণ আক্রান্ত ব্যক্তি কথা বলতে পারবে না। সেই সময় নিজে বাঁচার এবং অন্যকে বাঁচানোর একমাত্র কৌশল হাইমলিখ কৌশল।

[আরও পড়ুন: আমেরিকার আকাশে নজরদারি চালাচ্ছে চিনা বেলুন! চাঞ্চল্যকর দাবি পেন্টাগনের]

শ্বাসরোধ ঘটার আগে ফুসফুসের (Lungs) মধ্যে জমে থাকা বাতাসের উপরে এমন ভাবে চাপ দিতে হবে যাতে সেই চাপে বাতাসের সঙ্গে শ্বাসরোধ ঘটনা বস্তুটি বেরিয়ে আসে।আর শিশুদের ক্ষেত্রে বাঁ হাতে শিশুটিকে ধরে ডান হাত দিয়ে পিঠের মাঝখানে জোরে ধাক্কা দিতে হয়। বড়দের ক্ষেত্রে পিছন থেকে ধরে নাভিমণ্ডলে এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হয় যাতে মধ্যচ্ছদায় চাপ পড়ে। আর নিজের ক্ষেত্রে নাভিমণ্ডলকে কোনও শক্ত জায়গায় রেখে চাপ দিতে হয়। যূথিকা দেবী বলেন, ”ভারতীয় বিজ্ঞানের যুক্তিবাদী সমিতির ক্রমাগত প্রচারেই এই বিষয়টি জেনেছিলাম! আজ এভাবে কাজে লাগবে ভাবিনি।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার