পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ পড়ুন চোরবাগান সর্বজনীন পুজো প্রস্তুতি৷
শুভময় মণ্ডল: শহরের ভিতরে শহর। তারও আছে আত্মজীবনী। যে গল্প জানে শুধুই বাসিন্দা। সে এক বিচিত্র জীবন। উদয়াস্ত চলমান সে শহরের দিননামচা ভারী মজার। রঙিন অথবা কখনও ধূসর। নগরভেদে পালটায় বৈচিত্র। সুখও আছে আবার দুঃখও। শহরের অলি গলিতে আছে হাজারও ইতিহাস। যান্ত্রিক জীবন সে শহরের আনাচে-কানাচে। সে শহরে এক মুঠো আকাশ খুঁজে ফেরে পথিক মন। যন্ত্রণার গুরুভার লাঘব করতে পারে সেই উন্মুক্ত আকাশই। তারা ঝলমলে রাতে সে লেখে নাগরিক ক্লান্তির খতিয়ান। সেও এক আজব সার্কাস। বলা ভাল, নগর সার্কাস। এমনই এক নগর সার্কাসে এবার নিয়ে ফেলার বন্দোবস্ত করেছে চোরবাগান সর্বজনীন। উত্তরের জনপ্রিয় পুজোর অভিনব ভাবনা অনেক হেভিওয়েট পুজোরই চোখ টেনেছে। নগর সার্কাস তো কল্পকথা! তা আবার ভাবনা হয় কীভাবে? কিন্তু সেই অসাধ্যসাধন করে ফেলেছেন থিমমেকার শিল্পী দেবতোষ কর। তাঁর সৃজনে রূপ পাচ্ছে এই নগর সার্কাস। ৮২তম বর্ষে চোরবাগান সর্বজনীনের থিমের পোশাকি নামও তাই।
বাস্তবের এই নগর সার্কাসের কারিগর দেবতোষ কর কিন্তু ভাবনা-চিন্তার বিষয়টা দর্শনার্থীদের উপরই ছেড়ে দিচ্ছেন। মণ্ডপে ঢোকার মুখেই সার্কাসের তাঁবু। সেই তাঁবুর গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকলেই একটা অন্য দুনিয়ায় এসে পড়বেন দর্শনার্থীরা। যেখানে সার্কাসের মতো স্টেজ নেই, নেই জন্তু-জানোয়ার, মায় ক্লাউনও। আছে প্রচুর ঘর-বাড়ি। সার দিয়ে সেই ঘরবাড়ি দাঁড়িয়ে। হরেক আকারের। সবই তৈরি কাঠের। ঘরবাড়ির মধ্য দিয়ে ঝলমল করছে আলো। তবে মণ্ডপের মধ্যিখানে গোল করে কিছু স্তম্ভ। তার উপর দিয়ে উলটোভাবে ঝুলছে কিছু ঘরবাড়ি। অনেকটা ট্রাপিজের খেলার মতো। ঝুলন্ত সেই ঘরবাড়িগুলি সার্কাসেরই অঙ্গ। সবচেয়ে মজার হল মণ্ডপের উপর অংশ। রাতের আকাশে অজস্র তারা, যেন দু’চোখ ভরে দেখছে শহরটাকে। নগর সার্কাসের দর্শক যেন ওরাই। শিল্পীর ভাষায়, দর্শনার্থীদের সামনে ভাবনা এনে রেখে দেওয়া হচ্ছে। তাঁবুতে ঢোকা ইস্তক প্রতিমা দর্শন পর্যন্ত কে কীভাবে ভাবনাকে দেখবে তা দর্শনার্থীদের নিজস্ব ব্যাপার। ভাল-মন্দের বিচার ব্যক্তিগত। তবে থিমে চমক যে রয়েছে তা অনস্বীকার্য।
গর্ভগৃহে কিন্তু নগর সার্কাসের ভাবনা আর থাকছে না। সেখানে শান্তির ভাব বিরাজমান থাকছে মাতৃমূর্তির। প্রতিমা শিল্পীরই গড়া। তাতে বিশেষ পরিক্ষা-নিরীক্ষা করেননি শিল্পী। মণ্ডপসজ্জার আলোর দায়িত্বে সুরজিৎ সরকার। বাকি সবকিছুরই গুরুদায়িত্ব শিল্পীর কাঁধে। নগর সার্কাসের দিননামচা যেখানে নিজে হাতে লিপিবদ্ধ করেছেন দেবতোষ কর।
কেমন চলছে পুজোর প্রস্তুতি, দেখুন ভিডিওয়-
The post এবার পুজোয় নগর সার্কাসের তাঁবু ফেলছে চোরবাগান সর্বজনীন appeared first on Sangbad Pratidin.