সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দ্বেষের আগুনে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। দীপু দাস হত্যাকাণ্ড নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে জ্বলছে পদ্মাপাড়। গণপিটুনি দিয়ে খুনের পর পোড়া মুণ্ডু ও ধড় নিয়ে 'মৌলবাদী পশু'দের উল্লাস দেখে স্তম্ভিত সভ্য সমাজ। নারকীয় এই ঘটনায় কেঁপে উঠেছে গোটা বিশ্ব। এবার বাংলাদেশে হিন্দু যুবকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন কাজল আগরওয়াল (Kajal Aggarwal)।
সোশাল মিডিয়ায় অভিনেত্রী লেখেন, 'All eyes on Bangladesh Hindus', বাংলায় যার তর্জমা করলে দাঁড়ায় 'সকলের নজর বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর'। সেই পোস্টেই হিন্দু জাগরণের ডাক দেন কাজল। 'সিংহম' নায়িকার সংযোজন, "হিন্দুরা জেগে উঠুন। এই নীরবতা আপনাকে বাঁচাতে পারবে না।" অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের আবহে কাজল আগরওয়ালের এহেন পোস্ট দাবানল গতিতে ভাইরাল সোশাল পাড়ায়। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর এহেন আক্রমণে গর্জে ওঠায় কাজলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সিংহভাগ নেটাগরিকরা। কেউ বলছেন, 'যাক আপনার বুকের পাটা রয়েছে।' কেউ বা বললেন, 'ভাগ্যিস আপনার মতো সেলেব রয়েছে এদেশে, যাঁরা প্রতিবাদে গর্জে উঠতে জানেন।' কেউ বা কাজলের মন্তব্যে সায় দিয়ে বললেন, 'সত্যিই এবার হিন্দুদের জেগে ওঠা উচিত।' একাংশ আবার কাজলের পোস্ট শেয়ার করে সব হিন্দুদের এক হওয়ার ডাক দিলেন। তবে প্রশংসার পাশাপাশি বিতর্কও উসকেছে কাজলের মন্তব্যে।
নেটবাসিন্দাদের একাংশ বলছেন, 'হিন্দু কেন? এই ঘটনা গোটা মনুষ্য জাতির উপর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।' আবার ওয়াকিবহালমহলের একাংশের মত, 'সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতি উসকে দেবেন না। বরং বলুন, যে বর্বর ঘটনা ঘটেছে সেটা মানবিকতার উপর আঘাত।' কাজলের প্রতিবাদী পোস্ট নিয়ে সোশাল পাড়া দ্বিবিভক্ত হলেও আপাতত চর্চার শিরোনামে তাঁর মন্তব্য।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সঙ্গে চলে স্লোগান। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত সভ্য সমাজ।
