shono
Advertisement

Breaking News

Anjan Dutt

'মেয়েরা নিজেদের ইচ্ছেমতো পোশাক পরবে', মমতা শঙ্করের 'শাড়ি মন্তব্যে' মত বন্ধু অঞ্জনের

'দেরি হয়ে গেছে' ছবির মুক্তিলগ্নে মমতা শঙ্করের সঙ্গে বন্ধুত্রের সমীকরণ নিয়ে আড্ডায় অঞ্জন দত্ত।
Published By: Sandipta BhanjaPosted: 10:30 AM Nov 28, 2025Updated: 06:09 PM Nov 28, 2025

‘দেরি হয়ে গেছে’ মুক্তির প্রাক্কালে বন্ধু অঞ্জন দত্তর সঙ্গে সমীকরণ নিয়ে অকপট মমতাশঙ্কর। শুনলেন শম্পালী মৌলিক। 

Advertisement

অনেক ছবিতে আপনি আর মমতা শঙ্কর একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেই ‘গৃহযুদ্ধ’ (১৯৮২) থেকে শুরু। ‘খারিজ’, ‘আহারে মন’, ‘পালান’, ‘জানি দেখা হবে’ আরও আছে। সপ্তাশ্ব বসুর ‘দেরি হয়ে গেছে’-তে আলাদা কোথায়?
- আমরা দুজনেও ভেবেছিলাম, কেন এই ছবিটা করছি। যদিও ‘আহারে মন’ একদম আলাদা ছিল। আবার ‘খারিজ’ কিংবা ‘গৃহযুদ্ধ’-তে অন্যরকম। আমাদের যারা কাস্ট করেছে আলাদা রকমই ভেবেছে। ‘জানি দেখা হবে’-তে হয়তো ‘গৃহযুদ্ধ’-র মজা রেখেছিল। এই ছবিটা আলাদা এই কারণেই, আমার চরিত্রটা খুব কড়া। লুজার গোছের, অবসরপ্রাপ্ত এনকাউন্টার পুলিশ। খুব ভায়োলেন্ট। তাঁর জীবনে কিচ্ছু হয়নি। এ অল্পবয়সে একটি মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছিল। যে লেখাপড়ায় তার থেকে ভালো ছিল। শিক্ষিত, মার্জিত, সংসারী, কিন্তু লোকটা (অঞ্জন) কথা রাখতে পারেনি, পৌঁছতে পারেনি সঠিক সময়ে, অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। ফলে বিয়ে করতে পারেনি। তখন মেয়েটি অন্যত্র বিয়ে করতে বাধ্য হয়। ঘোরতর সংসারী হয়ে যায়। পরে স্বামী মারা যায় একসময়, আরও নানা ঘটনা ঘটে। কিন্তু সে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে হোমস্টে তৈরি করেছে, ছবি আঁকতে পারে, রবীন্দ্রনাথ নিয়ে তার বিস্তর পড়াশোনা। সেলফ মেড ওম্যান সে (মমতা শঙ্কর)।

এই দু’জনেরই চল্লিশ বছর আগে সম্পর্ক ছিল?
- হ্যাঁ, সেলফ মেড ওম্যান আর সেলফ মেড লুজার– এমন দু’জনের কম্বিনেশন। লোকটা ইতিহাসের প্রফেসর পরিচয় দিয়ে হোমস্টে-তে গেছে। গিয়ে ডোবাচ্ছে (হাসি)। লাগাতার একটা কমেডি আছে ছবিটায়। যেটা আমাদের নিয়ে কেউ করেনি। এই করতে করতে দুজনে পুরনো প্রেমটা খুঁজে পায়, তারপর দেখতে হবে।

৪০ বছর পরেও কি প্রেমের অনুভূতি?
- সেটা হয়। এবং সবথেকে আমার ভালো লেগেছে, যা শুধু মানসিক নয়। ছবিতে একটা সিকোয়েন্স আছে, চোখে ড্রপ দেওয়ার দৃশ্য। কাছে যাওয়ার পর একটা চাপা শারীরিক আকর্ষণ স্পষ্ট। শুধুই মনের, এমনটা নয়। সপ্তাশ্ব দৃশ্যটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করেনি কিন্তু হ্যান্ডল করেছে খুব পরিণতভাবে। এমন ধরনের সম্পর্কের গল্প বহুদিন হয়নি। আমরা দুজনেই কমেডিতে দক্ষ, সেটা আমাদের তেমন করতে দেওয়া হয়নি। দেখতে মজা লাগবে।

এই বয়সে এখনও প্রেমের অনুভূতি কাজ করে?
- হ্যাঁ, কাজ করে। মহিলাদের প্রতি না হলেও, জীবন, জায়গা, ভালোবাসা এগুলো বাদ দিলে তো চলবে না। এই যে স্ক্রিপ্ট লিখছি, দুটো চরিত্রের প্রেম কতটা দেখাব বা দেখাব না, তখন মনের ভিতরে যেটা আসছে, সেটা তো আমার অন্তরের ভালোবাসা।

আপনি এবং মমদি কেরিয়ারের গোড়ার দিক থেকে একসঙ্গে কাজ করেছেন। সেই বন্ধুত্ব কি এখনও আছে?
- এখনও আছে। বরং একটা সময় আমরা অনেক বড়দের পার্ট করেছি। বাচ্চা কোলে তুলতে পারছি না আমি বা মমতা, হিমশিম খেয়েছি (হাসি)। মৃণালদা জোর করে স্বামী-স্ত্রী বানিয়েছিল আমাদের। বুদ্ধদা তো কাছে বসতে দিত না। যাই হোক, কাজ করতে করতে এত বন্ধুত্ব হয়ে গেছিল, ওই নায়ক-নায়িকার প্রেমের সম্পর্ক কোনওদিনই হয়নি। চন্দ্রোদয় (মমতা শঙ্করের স্বামী) আমাকে ফোন করছে। মমতা ছন্দাকে ফোন করে বলছে, ‘এই অঞ্জন ফোন ধরে না।’ রাতুলের সঙ্গে নীলের বন্ধুত্ব– একটা পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেছে।

এই বন্ধুত্বের সূত্রেই জিজ্ঞেস করি, মমতা শঙ্কর বিভিন্ন সময় নানারকম মন্তব্যের কারণে আলোচনায় চলে এসেছেন। কখনও এ বিষয়ে ওঁকে পরামর্শ দিয়েছেন?
- না, সেদিক থেকে আই রেসপেক্ট পিপলস ডিগনিটি। মমতা যদি মনে করে মেয়েদের একরকমভাবে সাজা উচিত পাবলিকলি সেখানে আমি বলার কে! যেটা আমি বিশ্বাসই করি না। কিন্তু তার মতামত তার। মমতা উল্টে কিন্তু আমাকে পরামর্শ দেয়, “তুমি কী করে ‘পালান’-এর নেগেটিভ রিভিউ শেয়ার করলে? কৌশিকের ভালো লাগবে না।” ওকে বললাম, ‘আমি শুধু ভালো ভালো রিভিউ শেয়ার করব? খারাপটাও যদি না শেয়ার করি লোকে বলবে চুজি।’ এই করে মমতা আমাকে বকছে, ছন্দাকে বলছে। এইরকম একদিন ছন্দাকে ফোন করে বলছে, ‘অঞ্জনের কি মাথা খারাপ, ভদকার বোতল কাগজে মুড়ে রাস্তা ক্রস করে একটা ট্যাক্সিতে উঠল!’ ও কিন্তু অনেক বেশি উপদেশ দেয়। আমি একদিনের জন্যও ওকে ফোন করে বলিনি, ‘তুমি যেগুলো বলছ ট্রোলড হবে। বন্ধ করো এটা’। কখনও না।

তার মানে শাড়ি পরা মেয়েদের আঁচল পরিপাটি না থাকলে আপনি আপত্তি করবেন না।
- না, অফকোর্স নট। আমার খুব ভালো লাগে। একটা কথা বলতে চাই। দ্য ডে আই ফাউন্ড মেয়েরা ওপেনলি সিগারেট খাচ্ছে, ভালো লেগেছে। কেউ এগিয়ে এসে বলেছে, অঞ্জনদা, ‘একটা দেশলাই দেবেন, কিছু মনে করলেন না তো’? আই ফাইন্ড ইট গ্রেট। আমার শহরে এটা হয়। মেয়েরা নিজেদের মতো থাকে, আমার ভীষণ ভালো লাগে। যেটা তাদের ইচ্ছে করবে। কিন্তু মমতা ওর মতামত বলেছে, সেটা নিয়ে আমি বলতে চাই না। তবে কাজের সময় মমতা কিন্তু সেটা করে না। ওটার জন্য ছবি না দেখতে আসা ঠিক নয়। ব্যক্তিগত জীবনে, যাঁরা মনে করেন, মমতা ভুলভাল বলছে, তাঁরা প্লিজ ওটা ব্যক্তিগতই রাখুন। তাছাড়া একটা মমতা শঙ্কর আছেন। যাঁর কাকা রবি শঙ্কর। যথেষ্ট ভালো অভিনয় করে মমতা শঙ্কর। দারুণ নাচে। এইগুলো ভেবে ছবিটা দেখতে আসুন। (হাসি)

ছবিটার নামটা খুব সহজ, ‘দেরি হয়ে গেছে’। দেরির জন্য জীবনে কখনও ভালো কিছু হয়েছে?
- (একটু ভেবে) হুম...ইয়েস। আমি যদি গান না করতাম এবং গান করে রোজগার করে তারপরে সিনেমা করতে না আসতাম, তাহলে আমি হয়তো আজেবাজে সিনেমা বানিয়ে ফেলতাম। আমি সময়টা নিয়েছি এবং সার্টেন সাকসেস পাওয়ার পর ভিতরের ক্রাইসিস সরার পর ছবি করলাম– ‘বং কানেকশন’ বা ‘বড়াদিন’, তাতে ভালো হয়েছে। অনেক ভেবে নিজের রাস্তা খুঁজে বের করেছি। যেটা মৃণাল সেনের মতো একদম নয়। বা ঋতুপর্ণ,
অপর্ণা সেনের মতো নয়– আমার মতো সিনেমা করেছি। অনেক দিনের এই স্ট্রাগল না করলে, হয়তো চারটে ভুলভাল সিনেমা বানিয়ে ফেলতাম।

নীল দত্তর ছবি (বিয়ে ফিয়ে নিয়ে) আপাতত ফেস্টিভালে ঘুরছে। রিলিজ কেমন সময়ে?
- সামনের বছর রিলিজ।

আপনার নতুন ছবি? মমতা শঙ্করকে কাস্ট করবেন?
- আমি দু’জন বয়স্ক মানুষকে নিয়ে ছবি করার কথা ভেবেছি। কিন্তু সবাই করছে দেখে চুপ করে গেছি। সেটা অপর্ণা সেন শুনে বলেছিল, আমি করব তাহলে। ভাবলাম রূপা যদি রেগে যায়, মমতা কী বলবে! শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গেও আলাপ হয়েছে। দেখা যাক। আমাকে ছাড়াও যদি কেউ ছবি করতে চায় মমতাকে সাজেস্ট করব। এরপর বাদল সরকারকে নিয়ে ছবি করব, ওঁর সেন্টেনারিতে। ১ ডিসেম্বর শুটিং শুরু।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • মমতা ছন্দাকে ফোন করে বলছে, ‘এই অঞ্জন ফোন ধরে না। আর’ রাতুলের সঙ্গে নীলের বন্ধুত্ব একটা পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেছে: অঞ্জন দত্ত।
  • আমার শহরে মেয়েরা নিজেদের মতো থাকে, আমার ভীষণ ভালো লাগে: অঞ্জন দত্ত।
Advertisement