সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'শুধু কথা বলা হয়নি বলে কত মানুষ আমাদের থেকে দূরে চলে গেছে', 'কণ্ঠ' ছবির সেই জনপ্রিয় সংলাপ আজও প্রায় সকলের মুখে মুখে ফেরে। ক্যানসার আক্রান্ত হওয়ার পর এক রেডিওজকির জীবনের আমূল পরিবর্তনকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছিল ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি 'কণ্ঠ'। বরাবরের মতোই এই ছবির মাধ্যমে সকলকে এক বিশেষ বার্তা দিয়েছিলেন টলিপাড়ার হিট পরিচালক জুটি নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তবে শুধুই পর্দাতেই নয়, এবার বাস্তবেও এমন মারণরোগের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া মানুষদের পাশে দাঁড়াতেই পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও উইন্ডোজ নিল এক অনন্য প্রয়াস। এবার শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথভাবে উইন্ডোজ প্রোডাকশন হাউস ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় গড়ে তুলবেন 'কণ্ঠ ক্লাব'। ঠিক কী কী পরিষেবা মিলবে এই ক্লাবে?
শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যৌথভাবে উইন্ডোজ প্রোডাকশন হাউস ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবসের আগে গড়ে তুলবেন এই ক্লাব। ক্যানসারে আক্রান্তদের পাশে থাকবে 'কণ্ঠ ক্লাব'। মানসিকভাবে পাশে থাকবে তাঁদে। শুনবে তাঁদের মনখারাপের কথা। জানবে জীবনের নানা ভালো মুহূর্তের গল্প। শরীর ঠিক রাখার পাশাপাশি যে ক্যানসার আক্রান্তদের মনকেও ভালো রাখার উপায় খুঁজে দেবে 'কণ্ঠ ক্লাব' সেকথা বলাই বাহুল্য। কারণ মন ভালো থাকলেই ভালো থাকবে শরীর। মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারলেই এহেন মারণরোগকে জয় করা যাবে। আর সেই সাহসই জোগাবে নতুন এই প্রতিষ্ঠান। এখানেই শেষ নয়, বিনোদুনিয়ার বিভিন্ন তারকাদের উপস্থিতিতে তাঁদের জন্য আয়োজন করা হবে নাচ, গান, নাটকের মতো বিভিন্ন বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান, যেখানে অংশ নিতে পারবেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, একটা ছবি কীভাবে বাস্তবেও মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে এখান থেকে তা যেন আর পরিষ্কার হয়। নতুন এই উদ্যোগ নিয়ে বলতে গিয়ে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানান 'কণ্ঠ' ছবি নির্মাণের নেপথ্যের গল্প। বলেন, "বিভূতি বাবু নামে এক ব্যক্তি আমাদের কাছে এসে তাঁর জীবনযুদ্ধের গল্প আমাদের শুনিয়েছিলেন। তিনি নিজে মুখ ও গলার ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। নিজে এসে আমাদের তাঁর জীবনের গল্প ভাগ করে আমাদের তা নিয়ে ছবি তৈরির জন্য বলেছিলেন। বাস্তবের এই ঘটনা খানিক নিজের মতো করে নিয়ে আমরা একজন রেডিওজকির জীবনযুদ্ধকে তুলে ধরেছিলাম ছবিতে। দিয়েছিলাম এক বিশেষ বার্তা। বুঝিয়েছিলাম 'এভাবেও ফিরে আসা যায়'। কারণ ছবিতে কখনই হেরে যাওয়ার বার্তা দিতে চাই না আমরা। তাই ভয়কে জয় করে ফিরে আসার গল্প বোনা হয়েছিল আমাদের 'কণ্ঠ' ছবিতে। এই রোগে যাঁরা আক্রান্ত হন এ শুধু তাঁদের একার যুদ্ধ নয়। সমানভাবে তাঁদের সঙ্গে থাকা প্রতিটি মানুষের যুদ্ধ। আর এই যুদ্ধে যাতে প্রতিটি সৈনিক যাতে জয়ী হয় এমনটাই চাই। আর সে কারণেই আমাদের নতুন এই উদ্যোগ।"
