সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একাত্তরের ঐতিহাসিক যুদ্ধজয়। পাকিস্তানকে সম্মুখসমরে হারিয়েছিল ভারতীয় সেনা। বাংলাদেশ পেয়েছিল স্বাধীনতা। তার পর থেকে প্রতি বছর বিজয় দিবস উদযাপন। এই বিজয় দিবস যে কত বীর ভারতীয় সেনার রক্তের বদলে। তা নিজের বাবার কাহিনির মাধ্যমে জানালেন সেলিনা জেটলি।
ফরদিন খানের সঙ্গে 'জানশিন' সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে সফর শুরু করেছিলেন সেলিনা। 'নো এন্ট্রি', 'হে বেবি'-সহ একাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। তবে এখন হোটেল ব্যবসায়ী স্বামী পিটার হাগ ও তিন সন্তানকে নিয়েই ব্যস্ততা বেশি। সোশাল মিডিয়াতেই বেশ সক্রিয় সেলিনা। সেখানেই জানান, একাত্তরের যুদ্ধে 'ব্যাটেল অফ ভাদুরিয়া'র গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিলেন তাঁর বাবা কর্নেল ভি কে জেটলি।
যুদ্ধে গুরুতর আহত হয়েছিলেন ভি কে জেটলি। বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু রক্তাক্ত রণক্ষেত্রের স্মৃতি দগদগে ঘায়ের মতো তাঁর মনে ছিল। বাবার ছবি পোস্ট করে সেই স্মৃতিই স্মরণ করেন সেলিনা। ক্যাপশনে শেয়ার করেন বাবার বক্তব্য। সেই বক্তব্যের ভাবার্থ এই রূপ ---
'আশ্রয়চ্যুত হওয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে আমরা যেন রক্তগঙ্গার মধ্যে পড়েছিলাম। আমার চারপাশে মৃত্যু উপত্যকা। আমার বহু ভাতৃসম সহযোদ্ধা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে শরীর। আমার শরীরেও শার্পনেলে বিদ্ধ ছিল, পা ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে গুলি, কিন্তু ওদের তুলনায় আমার যন্ত্রণা যেন কিছুই না। আমি শুয়ে শুয়ে ভাইয়েদের যন্ত্রণা দেখে কাঁদছিলাম, শরীরটা টেনে টেনে এক আহত সৈনিকের কাছে গেলাম আর নিজের শেষ পেনকিলারটা তাঁকে দিয়ে দিলাম। রক্তাক্ত যুদ্ধভূমিতে মরণাপন্ন সেনার মুখে শুধু থাকে একটি শব্দ, মা। ওই তুমুল যন্ত্রণায়, শেষ নিঃশ্বাসে শুধু মা শব্দই আমাদের মতো সেনাদের একটু আরাম দেয়। যিনি জন্ম দিয়েছেন শুধু তাঁর নামই মুখে থাকে যখন মৃত্যু ঘণ্টা বাজে আর আমরা বীরত্বের কাছে আত্মসমর্পণ করি।'
সেলিনা জানান, এমন বীর বাবার সন্তান হতে পেরে তিনি গর্বিত। কর্নেল ভি কে জেটলিকে তিনি 'ম্যান অফ স্টিল'ও বলেন। জানান, সেনা থেকে অবসর নেওয়ার পরও তাঁর বাবা নিরন্তর মানবসেবা করে গিয়েছেন। বহু মানুষকে সাহায্য করেছেন তিনি।