সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'দেবী চৌধুরানী'র পর বাংলার ষোলো শতকের দোর্দণ্ডপ্রতাপ মহারানি 'রায়বাঘিনী ভবশঙ্করী'র রাজকাহিনি যে পর্দায় তুলে ধরতে চলেছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র, সেখবর গত ফেব্রুয়ারি মাসেই শোনা গিয়েছিল। আর সেই ছবিতেই 'ভবশঙ্করী'র ভূমিকায় অভিনয় করছেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। তবে মলাট চরিত্রে শুভশ্রী ছাড়া ইতিহাসনির্ভর নারীকেন্দ্রিক এই ছবির বাকি কাস্টিং তখনও ঘোষণা করা হয়নি। এবার ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলসূত্রে খবর, এই পিরিয়ড ড্রামার দুই মূল পুরুষ চরিত্রে দেখা যাবে আবির চট্টোপাধ্যায় এবং জীতু কমলকে। জল্পনা তুঙ্গে উঠতেই মুখ খুললেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র।
উল্লেখ্য, সদ্য ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত পরিচালিত 'গৃহপ্রবেশ' ছবিতে মন কেড়েছে জীতু-শুভশ্রীর সমীকরণ। দর্শকরাও ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছেন দুই অভিনেতাকে। এবার শোনা যাচ্ছে, পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্রের জন্য পর্দায় আরও একবার ধরা দেবেন জীতু-শুভশ্রী। তবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নয়। বরং একে-অপরের সম্মুখ সমরে। কোন চরিত্রের জন্য ভাবা হয়েছে জীতুকে? গুঞ্জন, পাঠান শাসক 'ওসমান খান লোহানি'র চরিত্রে ধরা দেবেন জীতু। ইতিহাস অনুযায়ী, ভবশঙ্করীর রাজকাহিনিতে নেতিবাচকভাবেই রয়েছেন এই পাঠান শাসক। আর সেই দাপুটে ভূমিকাতেই জীতু থাকার জল্পনা। অপরদিকে 'রায়বাঘিনী ভবশঙ্করী'র স্বামী মহারাজা রুদ্রনারায়ণ রায়মুখুটির ভূমিকায় দেখা যেতে পারে আবির চট্টোপাধ্যায়কে। তবে শুভ্রজিৎ মিত্রের 'ক্যুইনস অব বেঙ্গল' ট্রিলজির দ্বিতীয় সিনেমা 'রায়বাঘিনী ভবশঙ্করী'র কাস্টিংয়ে চমক এখানেই শেষ নয়!
সূত্রের খবর, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও থাকছেন একটি বাঘা চরিত্রে। সম্ভবত হরিদেব ভট্টাচার্যের ভূমিকায় দেখা যাবে পরিচালক-অভিনেতাকে। শিবযানির চরিত্রে কৌশানি মুখোপাধ্যায়। পর্দায় দুর্লভ দত্ত হয়ে উঠবেন কৌশিক সেন এবং সম্রাট আকবরের চরিত্রে সবথেকে বড় চমক হিসেবে পাওয়া যেতে পারে টলিউড সুপারস্টার জিৎকে। বাংলায় এহেন ডাকসাইটে কাস্টিং নিয়ে যদি এই পিরিয়ড ড্রামা তৈরি হয়, তাহলে যে দর্শকদের জন্য একটা বড় চমক অপেক্ষা করছে, তা বলাই বাহুল্য। সত্যিই কি বাংলার দর্শক এহেন তারকাখচিত উপহার পেতে চলেছেন? কাস্টিংয়ের গুঞ্জন তুঙ্গে উঠতেই পরিচালক শুভ্রজিৎ সংবাদ প্রতিদিন ডট ইন-কে জানালেন, "এহেন জল্পনা কিন্তু একেবারেই ভিত্তিহীন। আমি আপাতত দেবী চৌধুরানী নিয়ে ব্যস্ত।"
ভবশঙ্করী ছিলেন বাংলার এক গ্রাম্য ব্রাহ্মণ জমিদার দীননাথ চৌধুরীর কন্যা। ছোটবেলা থেকে অসিখেলা, ঘোড়সওয়ারি, তীরন্দাজিতে পারদর্শিনী। যে মহিয়সীর কর্মকাণ্ড মুগ্ধ করেছিল মহারাজা রুদ্রনারায়ণ রায়মুখুটিকে। পরবর্তীতে তাঁর বীরত্বের জন্যই বাংলা বাহ্যিক শত্রুর আক্রমণ থেকে মুক্তি পায়। এই রায়বাঘিনী উপাধি সম্রাট আকবরের কাছ থেকেই পাওয়া ভবশঙ্করীর। পর্দায় সেই কাহিনিই ফুটিয়ে তুলবেন শুভ্রজিৎ-শুভশ্রী।
এর আগে সিনেমার ঘোষণা করার সময়ে পরিচালক জানিয়েছেন, ‘দেবী চৌধুরানী’কে নিয়ে গবেষণা করার সময়েই মহারানি ভবশঙ্করীর বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য পান তিনি। ষোলো শতকের মোঘল আমলে অস্থির রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভবশঙ্করীর বীরত্ব, ব্যক্তিত্ব মুগ্ধ করে পরিচালককে। আর ঠিক সেইসময়েই শুভ্রজিৎ ‘রায়বাঘিনী ভবশঙ্করী’ তৈরি করার পরিকল্পনা করে ফেলেন। ট্রিলজির তৃতীয় নারীকেন্দ্রিক চরিত্রের হদিশও তিনি পেয়ে গিয়েছেন ইতিমধ্যে। রানি ভবানীর কাহিনির প্রেক্ষাপটে সেই সিনেমা করার ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। তবে আপাতত ‘রায়বাঘিনী ভবশঙ্করী’র প্রি প্রোডাকশন নিয়ে ব্যস্ত শুভ্রজিৎ মিত্র।
