সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সদ্য নারীদিবস পেরিয়েছে। দিনভর সোশালপাড়ার শুভেচ্ছাবার্তার বন্যা। নারীদিবসমূলক পোস্টের ছয়লাপ। ক্যালেন্ডারের এই একটি দিনই কেন নারীত্ব উদযাপনের জন্য বরাদ্দ, কেন রোজ নয়? প্রশ্ন বরাবরের। এবার বিলম্বিত শুভেচ্ছাবার্তায় সমাজে নারীদের অবস্থান নিয়ে সরব লগ্নজিতা চক্রবর্তী। যিনি বরাবরই স্পষ্টভাষী। উচিত কথা বলতে পিছপা হন না। এবার তিনিই আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শিকলে পদে পদে কীভাবে বাধাপ্রাপ্ত হতে হয় নারীদের?
ফেসবুক পোস্টে লগ্নজিতা (Lagnajita Chakraborty) তিনটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন। যা পর্যালোচনা করলেই বোঝা যায়, এই একুশ শতকেও নারীরা কোথায় দাঁড়িয়ে। গায়িকা লিখেছেন, 'নারীদিবস চলে গিয়েছে জানি। তিনটে ঘটনা গত ২-৩ দিনে প্রত্যক্ষ করলাম। প্রথম ঘটনা আমার এক বন্ধুর মধ্যাহ্নভোজের সময়ে। তার বরের সঙ্গে লাঞ্চে বসবে, শাশুড়ি এসে বললেন, ওকে পেটিটা দিস। গাদাটা তোর জন্য রাখলাম। ও তো গাদা খেতে পারে না। তাতে আমার বন্ধু বলল আমিও তো গাদা খেতে পারি না। তারপরের কথপোকথন লম্বা কিন্তু সেটা জরুরি জয়। জরুরি এটুকুই। শাশুড়ির কিন্তু কোনও দোষ নেই। উনিও হয়তো যখন বিয়ে করে এসেছিলেন তখন হয়তো গাদা খেতে পারতেন না। পেটির মাছটাই খেতেন। ছেলে না থাকলে বউমাকেই পেটিটা দেন।' দ্বিতীয় ঘটনা এক বন্ধুর বাড়ির পুজোয়।
লগ্নজিতার সংযোজন, 'আরেক বন্ধুর বাড়িতে এই শনিবার রক্ষাকালী পুজো ছিল। কিন্তু ওর ঋতুস্রাব শুরু হয়ে যায়। সে নিজে এসবে বিশ্বাস না করলেও বাকিরা বিশ্বাস করে বলে বাড়ির বড়দের জানায়। সবাই তাকে একবাক্যে বলে- তুই তাহলে আজ কিছুতেই হাত দিস না। আর ঠাকুর ঘরেও ঢুকিস না।... এখানেও বাকিদের দোষ দেখি না। কারণ যারা বলেছে, তাদেরও ঠাকুরঘরে ঢুকতে দেওয়া হত না বা হয় না। অথচ পুজোটা কালী ঠাকুরের, যিনি একজন আদ্যোপান্ত নারী। কাকতালীয়ভাবে সেদিনই আবার নারীদিবসও ছিল। কি মজার না?' শেষপাতে লগ্নজিতা চক্রবর্তী মনে করিয়ে দিলেন যে, 'হ্যাঁ, আমি ২০২৫ সালের কলকাতার কথাই বলছি। নারী দিবসের বিলম্বিত শুভেচ্ছা তাহলে?' সমাজের ট্যাবু নিয়েই হোক কিংবা যে কোনও রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রতিবাদ করতে দেখা যায় গায়িকাকে। এবার নারীদিবস পার হতেই সামাজিক ট্যাবুগুলির কথা মনে করিয়ে দিলেন তিনি।
