শম্পালী মৌলিক: রাজদীপ পাল এবং শর্মিষ্ঠা মাইতির প্রথম ফিচার ‘কালকক্ষ’ জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। তাঁদেরই পরের ছবি ‘মন পতঙ্গ’ মুক্তি পাচ্ছে ১৩ ডিসেম্বর। যে ছবি ‘কিফ’-সহ একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে সম্মানিত হয়েছে। ফুটপাথবাসী মানুষের জীবন, স্বপ্ন, আশা, স্বপ্নভঙ্গ, বাসস্থানের অনিশ্চয়তা সবকিছু জড়িয়ে এ ছবির চিত্রনাট্যে। ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সীমা বিশ্বাস, জয় সেনগুপ্ত, নবাগত শুভঙ্কর মোহান্ত, বৈশাখী রায়, অমিত সাহা, অন্নিষ্ঠা বিশ্বাস, ত্রিবিক্রম ঘোষ, অনিন্দিতা ঘোষ, অনিন্দ্য রায় প্রমুখ। তবে এই ডিসেম্বর একাধিক বড় বাংলা ছবির ভিড়, তার ওপর ‘পুষ্পা টু’ রয়েছে, সেক্ষেত্রে মুক্তি নিয়ে কি চিন্তা রয়েছে? পরিচালক রাজদীপ বলছেন, “যেটা নিয়ে আমি কিছু করতে পারব না, সেটা নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। ‘পুষ্পা টু’ রিলিজ করছে জানতাম, ১৩ ডিসেম্বর আমরা ‘মন পতঙ্গ’ রিলিজ করছি। সেই সময় ‘পুষ্পা টু’-র চাপ একটু কমেই যেত। তারপরে যেগুলো রিলিজ করছে এখন, সবগুলোর রিলিজ আগে নিশ্চিতভাবে এই তারিখ ছিল না। ততদিনে আমাদের মুক্তির দিন স্থির হয়ে গেছে। আমাদের প্রযোজকের বিশাল লেগ্যাসি থাকলেও, নতুন ইনিংসে তিনিও নতুন, একবার সব ঠিক হয়ে গেলে, আবার সব রিঅ্যারেঞ্জ করা সম্ভব নয়। আজকের দিনে বড় প্রযোজকের পক্ষেও তেমন করা শক্ত। কাজেই, যে জিনিস হাতে নেই, ভেবে লাভ নেই। তার চেয়ে যা হাতে আছে, তাই নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি আমরা।”
অন্যদিকে পরিচালক শর্মিষ্ঠা বলছেন, ‘যেকোনও সময়েই হয়তো চিন্তা থাকত, বা থাকবে। ক্লিন স্লেট বা সেফ প্লে গ্রাউন্ড পাব, এমন ভাবলে হবে না। প্রতিকূলতা থাকবে, তার মধ্যেই চলতে হবে। ‘মন পতঙ্গ’ শুরু থেকেই বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এগিয়েছে। ছবিটা যে সময় শুরু হওয়ার কথা ছিল তখন কোভিড এসে যায়। তখন ছবিটা এতটা বড় মাপের হবে আমরা পরিকল্পনা করিনি। তারপর ন্যাচারাল ক্যালামিটি পেরিয়ে ছবিটা তৈরি হল। তারপরে গত বছর ‘কিফ’-এ অপ্রত্যাশিতভাবে সেরা বাংলা ছবি নির্বাচিত হয়, ‘গোল্ডেন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ পুরস্কার পায়। এটা ছবির জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। তারপর বিভিন্ন ফেস্টিভ্যালে গেছে ছবিটা, লাস্ট জাফনাতে খুবই সমাদৃত হয়।” শর্মিষ্ঠা-রাজদীপ পথে নেমে ছবিটার প্রচার করছেন। এখন বাংলা ছবির প্রচারেরও বিশাল প্যাকেজ হয়। চাকচিক্য এবং পুঁজি দুটোই লাগে। সেইখানে দাঁড়িয়ে এইভাবে প্রচার কেন? উত্তরে শর্মিষ্ঠা বলছেন, ‘সত্যি বলতে ছবিটা যে ধরনের, স্টারডম ভেবে প্রচার করার জায়গা নেই। আমাদের আলাদা করতেই হত, তাই মানুষের সঙ্গে পথেই কানেক্ট করা, কারণ পথের মানুষের জীবন ছবির কেন্দ্রে। আর একটা বিষয় বলব, আমরা কিন্তু ভাবিনি অর্গানিকালি একটা ট্রেলার তিন সপ্তাহের মধ্যে চার লাখ ছুঁইছুঁই ভিউস হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে আনন্দের। তাই চাপ থাকলেও, ইতিবাচক কিছু দিকও আছে।’ বললেন শর্মিষ্ঠা।