সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'ধুরন্ধর' ছবিতে পাকিস্তানের প্রাচীন শহর লিয়ারির গ্যাংস্টারদের বাড়বাড়ন্ত এবং এক ভারতীয় গুপ্তচরের সেই গোষ্ঠীগুলিকে নিকেশ করার কাহিনি তুলে ধরেছেন পরিচালক আদিত্য ধর। রণবীর সিং অভিনীত 'হামজা আলি'র সেই মিশন যে বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়োচ্ছে, বক্স অফিসের ঝকঝকে মার্কশিটই তার প্রমাণ। কিন্তু পাকিস্তান বিরোধী প্রেক্ষাপটের জেরে মধ্যপ্রাচ্যের একাধিক দেশে মুক্তির আলো দেখেনি 'ধুরন্ধর'। এবার খবর, ভারতীয় ছবি 'ধুরন্ধর'কে জবাব ছুড়তে 'সিনে মিসাইল' আনছে পাকিস্তান! কীরকম?
সম্প্রতি পাকিস্তানের সিন্ধ সরকারের তরফে 'মেরা লিয়ারি' নামে একটি সিনেমার ঘোষণা করা হয়েছে। যে ছবিতে তুলে ধরা হবে করাচির লিয়ারির বাসিন্দাদের রোজনামচা থেকে জীবনচর্যা। তবে সদ্যঘোষিত এই পাক সিনেমার মূল উদ্দেশ্যই, 'ধুরন্ধর'কে জব্দ করা! কারণ গত ১৩ ডিসেম্বর সিন্ধ প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী শারজিল ইনাম মেমন 'মেরা লিয়ারি'র ঘোষণা করেই বলিউড সিনেমার উদ্দেশে কটাক্ষবাণ ছুড়েছেন। তাঁর দাবি, "'ধুরন্ধর' ছবিতে লিয়ারিকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কারণ লিয়ারি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, হিংসা-রক্তারক্তির জায়গা নয়। এখানকার বাসিন্দারা যেমন সংস্কৃতিপ্রেমী, প্রতিভাবান, তেমনই লিয়ারিতে শান্তি বিরাজমান।" খবর, বলিউড সিনেমার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতেই 'সিনে-মিসাইল' হিসেবে 'মেরি লিয়ারি'র নিক্ষেপ করতে চলেছে সিন্ধ সরকার।
জানা গিয়েছে, নতুন বছরের মে মাসে মুক্তি পাবে সিন্ধ ভাষায় তৈরি 'মেরা লিয়ারি' ছবিটি। যদিও লিয়ারির আসল গল্প তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতারা, তবে প্লট এখনই ফাঁস করেননি তাঁরা। ছবিতে অভিনয় করবেন আয়েশা ওমর, দানির মোবীন, সামিয়া মুমতাজ এবং নায়ার এজাজের মতো পাক তারকারা। গল্পকার এবং পরিচালক আবু আলিহা। আর 'ধুরন্ধর'কে জবাব ছোড়ার এহেন পাক-কায়দায় হেসে খুন ভারতীয় নেটবাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, 'এই সিনেমা তো কেউ দেখবে না।' কারও বা বিদ্রুপ, 'পাকিস্তানে তৈরি হওয়া সিনেমা শুধু পাক মুলুকের লোকেরাই দেখেন। তাই 'ধুরন্ধর'কে জবাব ছোড়ার প্রয়াস বিশ বাঁও জলে যাবে!' এহেন নানা বিদ্রুপবাণের ভিড় 'মেরি লিয়ারি'কে নিয়ে।
প্রসঙ্গত গুপ্তচরদের কাহিনী পর্দায় কম দেখেননি দর্শকরা। তবুও স্পাই থ্রিলারের ভিড়ে ভিন্ন স্বাদ দিয়েছে ‘ধুরন্ধর’। পাকিস্তানের ছোট্ট শহর লিয়ারি, সেখানকার অপরাধ জগতের এক আস্ত দলিল পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক আদিত্য। সিনেমাজুড়ে মারাকাটারি অ্যাকশন, রক্তারক্তি আর হিংসার কাহিনি। পাকিস্তানের অন্যতম প্রাচীন শহর যেখান থেকে ইসলামাবাদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারের দৌড় শুরু হত। এই লিয়ারি একসময়ে বাবু ডাকাইত আর রহমান ডাকাইতের (অক্ষয় খান্না) দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অপরাধ গোষ্ঠীর ভয়ে কাঁপত। আর সেই গোষ্ঠীগুলির মদতেই বহাল তবিয়তে সিংহাসনের তলায় ছড়ি ঘোরাত সন্ত্রাস গোষ্ঠীগুলি। কীভাবে 'অপারেশন' চলত? আদিত্যর 'ধুরন্ধর' ছবিতে সেই গল্পই ফুটে উঠেছে। এসবের সঙ্গে সমান্তরালে বালোচ বিরোধী পাক-রাজনীতির প্লটও জুড়ে দিয়েছেন পরিচালক। আর তাতেই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে 'পাকবিরোধী' তকমা জুটেছে 'ধুরন্ধুর'-এর কপালে! যার জেরে বাহারিন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর মতো দেশগুলিতে মুক্তি পায়নি এই সিনেমা।
