সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: "ইতিহাস বইয়ে আকবর-ঔরঙ্গজেবের কথা, দেশের আসল নায়করাই ব্রাত্য", দিন কয়েক আগেই এহেন মন্তব্য করে ইতিহাসের সিলেবাস বদলের দাবি রেখেছিলেন অক্ষয় কুমার। এবার তাঁর 'কেশরী ২' সহ-অভিনেতা আর মাধবনের কণ্ঠেও একই সুর। অভিনেতার সাফ কথা, "ইতিহাস বইতে আটটি চ্যাপ্টার শুধু মোঘলদের নিয়ে, দক্ষিণের রাজ্যগুলি ইতিহাসে সমৃদ্ধ হলেও সেগুলোর উল্লেখ কম, কেন?" ক্ষুব্ধ মাধবনের দাবি, "তামিল বিশ্বের প্রাচীন ভাষাগুলির মধ্যে অন্যতম। কিন্তু ইতিহাস বইতে চোল, পাণ্ড্য, পল্লবদের মতো দক্ষিণী রাজতন্ত্রগুলোর জন্য বরাদ্দ হয়েছে শুধু একটি চ্যাপ্টার।"
এক সাক্ষাৎকারে মাধবনের মন্তব্য, "এই কথাগুলি বলার জন্য আমি হয়তো সমস্যায় পড়তে পারি, তবুও বলব। স্কুলে পড়াকালীন আমি যখন ইতিহাস পড়েছি, দেখেছি পাঠ্যপুস্তকে মোঘলদের ইতিহাস শেখানোর জন্য আটখানা চ্যাপ্টার রয়েছে। দুটি অধ্যায় হরপ্পা-মহেঞ্জোদাড়ো সভ্যতা নিয়ে। চারটে চ্যাপ্টার বিট্রিশ রাজত্ব আর ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। আর দক্ষিণের যে রাজতন্ত্রগুলি ছিল, মানে চোল, পাণ্ড্য, পল্লব, বঞ্জি- সেসব রাজাদের গৌরবগাথার জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোটে একটা চ্যাপ্টার।" ঠিক এই বিষয়েই আপত্তি তুলেছেন অভিনেতা।
মাধবনের সংযোজন, "ব্রিটিশ এবং মোঘলরা প্রায় ৮০০ বছর ধরে আমাদের শাসন করেছে কিন্তু চোল সাম্রাজ্য তো ২,৪০০ বছরের পুরনো। চোলরা সমুদ্রপথ এবং নৌশক্তির পথিকৃৎ ছিল। মশলা পাঠানোর জন্য যে সামুদ্রিক পথ ওরা আবিষ্কার করেছিল, সেটা রোম পর্যন্ত সুবিস্তৃত ছিল। কিন্তু দক্ষিণের চোলদের এসব গৌরবগাথা ইতিহাস বইতে কোথায়? শক্তিশালী নৌবাহিনী নিয়ে অঙ্করভাটে মন্দির তৈরির ইতিহাস কোথায় পাঠ্যপুস্তকে? জৈন ধর্ম, বৌদ্ধ ধর্ম এবং হিন্দুধর্ম তো চিনে ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু কোরিয়ার লোকেরা অর্ধেক তামিল ভাষায় কথা বলেন, কারণ আমাদের ভাষা অতদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে ইতিহাস সমৃদ্ধ দক্ষিণের সম্রাটদের রাজত্বের কাহিনি সিলেবাসে শুধু একটা চ্যাপ্টারেই সীমাবদ্ধ।" শেষপাতে কড়া সুরেই মাধবন প্রশ্ন ছোড়েন, "এই বিকৃত ইতিহাসের সিলেবাসের জন্য এবার আমরা কাকে দায়ী করব? কার নির্দেশে পাঠ্যপুস্তকে ব্রাত্য দক্ষিণা সাম্রাজ্যগুলি? কে বানিয়েছে এমন সিলেবাস? তামিল বিশ্বের প্রাচীনতম ভাষা কিন্তু কেউ এটা জানেও না। আর এখনও তো আমাদের সংস্কৃতির প্রাচীন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়েও হাসিঠাট্টা করা হয়।"
