সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্টার থিয়েটার-এর নামবদলে বিনোদিনীর নামে নামকরণ করা হোক। তাঁর সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিচার হোক, দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর কাছে মানত করেছিলেন পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এক নারীর জীবনসংগ্রাম তাঁকে বিচলিত করেছিল। সেই ভাবনা থেকেই বাংলার থিয়েটার ইতিহাসের পাতা থেকে পর্দায় 'বিনোদিনী'কে আনছেন তিনি। আগামী ২৩ জানুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে 'বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান' (Binodiini: Ekti Natir Upakhyan)। তার প্রাক্কালেই স্টার-এর নামবদলের জন্য মানত পূরণ হওয়ায় দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে যাবেন রামকমল মুখোপাধ্যায়। সঙ্গী তাঁর পর্দার 'বিনোদিনী' রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)।
১৪০ বছর পর বিনোদিনীর বঞ্চনার ইতি। স্টার-এর নামবদলে 'বিনোদিনী থিয়েটার' করে কিংবদন্তী নাট্যব্যক্তিত্বকে যোগ্যসম্মান দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক নারীর হাত ধরেই আরেক নারী তাঁর প্রাপ্য সম্মান ফেরত পেলেন। রামকমল মানত করেছিলেন, বঞ্চনার যত বছর পর ন্যায় আসবে, ততগুলি প্রদীপ জ্বালিয়ে দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেবেন তিনি। কথামতো সেই ১৪০টি প্রদীপই এবার জ্বালালেন রামকমল, রুক্মিণী। ১৮৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্টার থিয়েটার। প্রথমটায় কথা ছিল, স্টারের নামবদলে বিনোদিনী দাসীর নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে 'বি' থিয়েটার করা হবে। তবে প্রতারিত হন তিনি। ১৪০ বছর পার করে বিনোদিনীকে জিতিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এহেন উদ্যোগে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন রুক্মিণী মৈত্র। এবার পরিচালকের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বরে মা ভবতারিণীর পুজো দিলেন অভিনেত্রী।
রামকমল মুখোপাধ্যায়ই নাকি শুটের অবসরে একবার রুক্মিণী মৈত্রর কাছে এই মানতের কথা ফাঁস করেছিলেন। সম্প্রতি সেই ইচ্ছেপূরণ হওয়ার পর অভিনেত্রীই সেটা পরিচালককে মনে করিয়ে দেন। পরিচালকের আক্ষেপ, বাঙালি কোনওদিনই বিনোদিনী দাসীকে নিয়ে মাথা ঘামায়নি। তাই রামকমল চেয়েছিলেন, তাঁর সিনেমার মাধ্যমেই যেন বিনোদিনীকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া যায়। অবশেষে সিনেমা মুক্তির আগেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে স্টারের নামবদলে বিনোদিনী থিয়েটার হল। আর তাতেই উচ্ছ্বসিত তো বটেই আবার আবেগপ্রবণও পরিচালক এবং অভিনেত্রী। তাই দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিয়ে ১৪০টি প্রদীপ নিবেদন করবেন তাঁরা।
স্টার থিয়েটারের নাম বদলে বিনোদিনী থিয়েটার হওয়ায় পর্দার 'বিনোদিনী দাসী' আবেগপ্রবণ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। সোশাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন, "১৪০ বছর ধরে একজন নারী যে লড়াই করেছে, তাঁকে যোগ্য সম্মান দেওয়ার জন্য। কীভাবে আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে, তা বুঝতেই পারছি না। একজন নারী হয়ে, আরেকজন নারীকে সম্মান ফিরিয়ে দিলেন আপনি। বিনোদিনীর পুরো টিমের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।"