অর্ণব দাস: বাংলাদেশে হিন্দু হত্যা, নিষিদ্ধ ইসকন। তার উপর পরিস্থিতির আগুনে বারুদ ঢেলেছে বাংলাদেশে, তেরঙ্গার অপমান। এই পরিস্থিতিতে বাংলার মাটিতে বাংলাদেশি সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা বন্যা চৌধুরীর অনুষ্ঠান! উঠল বয়কটের ডাক। সোশাল মিডিয়ায় ঘুরছে এমনই এক পোস্ট।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর মধ্যগ্রামের সুভাষ ময়দানে শুরু হবে ১৯ তম পরিবেশ সচেতনতার মেলা। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসার কথা বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার। আর সেই অনুষ্ঠানের এক পোস্টার নিয়েই সোশাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড়। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে অনুষ্ঠান করতে দিতে নারাজ মধ্যমগ্রামের নাগরিক সমাজের একাংশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তাঁরা পৌরসভার কাছে আবেদন করেছেন যাতে বন্যাকে অনুষ্ঠান করতে দেওয়া না হয়। শুধু এখানেই শেষ নয়, মধ্যমগ্রাম নাগরিক সমাজ জানিয়েছে, যদি ওই শিল্পী অনুষ্ঠান করে তাহলে এবারে পরিবেশ মেলা তাঁরা বয়কট করবে। ভাইরাল হওয়া পোস্টে লেখা হয়েছে, 'একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মধ্যমগ্রাম পুরসভার কাছে আবেদন জানাচ্ছি আগামী ২৮ডিসেম্বর মধ্যমগ্রাম পরিবেশ মেলায় বাংলাদেশের এই শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গান পরিবেশনা অবিলম্বে বাতিল করা হোক। বাংলাদেশের কোন শিল্পীকে দয়া করে কোন অনুষ্ঠান করতে দেবেন না। আগে দেশ, তারপর সব। অনুগ্রহ করে বিষয়টি ভেবে দেখবেন।'
এই পোস্টটিই ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুকে এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি হওয়ায় পোস্টটি ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। তারপরেই এ নিয়ে শুরু হয় চর্চা। এনিয়ে মধ্যমগ্রাম নাগরিকবৃন্দ ফেসবুক গ্রূপের অ্যাডমিন রূপক দে বলেন, ''বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চলছে, আমাদের দেশের জাতীয় পতাকাকে অবমাননা করছেন সেদেশের কট্টরপন্থীরা। এমন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশের কোন শিল্পীরাই প্রতিবাদ করছেন না।আমাদের কাছে জাতীয়তাবোধ আগে। তাই আমরা বাংলাদেশের শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার সংগীতানুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছি।''
এখনও শিল্পীর তালিকা চূড়ান্ত হয়নি জানিয়ে এই প্রসঙ্গে মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ বলেন, ''যে কোন দেশের শিল্পীকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। আমরা শিল্পীদের নিয়ে বিভাজনের রেখা টানতে চাই না। এটা বাঙালি, বিশেষ করে সঙ্গীত অনুরাগীদের সংস্কৃতি নয়। যারা বিভাজনে বিশ্বাস করেন, তাঁরা করতেই পারেন। তবে, এটা ঠিক নয়।'' এ নিয়ে পুরসভার কাছে কেউ আপত্তি তোলেননি বলেও জানিয়েছেন তিনি।