সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাড়ে তিন দশকের অভিনয় কেরিয়ারে একাধিকবার নিজেকে ভেঙেচুরে নতুন ভূমিকায় তুলে ধরেছেন। 'মেল ডমিনেটেড ইন্ডাস্ট্রি'র সংজ্ঞা বদলেছেন, বললেও অত্যুক্তি হয় না। বাস্তবের মতো পর্দাতেও দাপুটে ভূমিকায় তাঁকে দেখেছেন দর্শক। এবার বেলা দে লুকে নজর কাড়লেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। পরনে সাদামাটা সুতির শাড়ি। কপালে ছোট্ট টিপ। ঠোঁটের কোণায় একচিলতে স্মিত হাসি। লম্বা বিনুনী। আর কানে রেডিও উপস্থাপকদের মতো বড় হেডফোন। স্বাধীনতা উত্তর পর্বে বাংলার 'মহিলা মহলে'র অভিজাত, পরিশীলিত ব্যক্তিত্বের অন্যতম মূর্ত প্রতীক বেলা দে'র ভূমিকায় ফার্স্ট লুকেই চমক দিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
রান্নার জিনিয়াস, লেখিকা হওয়ার পাশাপাশি ষাট-সত্তরের দশকে আকাশবাণীর রেডিও উপস্থাপক হিসেবেও কাজ করেছিলেন বেলা দে। আবার কখনও কার্টুনিস্ট, কখনও বা উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মী। নিজেকে কখনও একটা পরিসরে আটকে রাখেননি বেলাদেবী। বাস্তবজীবনে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও তাই। অভিনেত্রী হওয়ার পাশাপাশি দক্ষ প্রযোজকও তিনি। এ যেন এক অদ্ভূত সমাপতন! ঋতুপর্ণার 'বেলা' লুকে তেমনটাই ইঙ্গিত। বাংলা সিনেমায় নারীকেন্দ্রিক চরিত্রের কথা উঠলেই ঋতুপর্ণার নাম উল্লেখ্য, অতঃপর বেলা চরিত্রে তিনি ব্যতীত কার নামই বা ভাবা যায়! স্বাধীনতা উত্তর পর্বে স্রোতের বিপরীতে হেঁটে তিনি যে পেশা বেছে নিয়েছিলেন, তা নিঃসন্দেহে কুর্নিশযোগ্য। সেই দাপুটে নারীর জীবনকাহিনি পর্দায় ফুটিয়ে তুলবেন অনিলাভ চট্টোপাধ্যায়। জানুয়ারি মাসে সংবাদ প্রতিদিন-এর তরফেই এই খবর প্রকাশ করা হয়েছিল। এবার বেলা দে লুকে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর ঝলক প্রকাশ্যে। সূত্রের খবর, ছবিতে বেলা ছবিতে বেলার দুই দাদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন পদ্মনাভ দাশগুপ্ত এবং দেবদূত ঘোষ। আর বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রর ভূমিকায় দেখা যাবে দেবপ্রতীম দাশগুপ্তকে।
প্রায় দেড়মাস ধরে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় শুটিং চলছে। তবে সবটাই খুব চুপচাপভাবে। ছবিটির প্রযোজনায় ‘গ্রেমাইন্ড কমিউনিকেশন’। সেই যুগের বিশিষ্টজন যাঁদের সঙ্গে বেলা দে’র যোগাযোগ বা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তাঁদের কথাও উঠে আসবে এই ছবিতে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে আরও অনেক স্টারকাস্ট চমক হিসেবে থাকবেন ছবিতে। প্রসঙ্গত, ‘রান্নার অমনিবাস’, ‘রান্না অভিধান’, ‘হেঁশেল’, ‘সহস্র এক রান্না’, ‘বাঙালির রান্নাঘর’, ‘সহজ রান্না সমগ্র’, ‘আধুনিক রান্না ও জলখাবার’, ‘নোনতা মিষ্টি জলখাবার’, ‘টিফিনের টুকিটাকি’ এমন অজস্র জনপ্রিয় বই বেলাদেবীর লেখা। হারিয়ে যাওয়া রান্নার খাজানা ছিল তাঁর কাছে। সেই মানুষটা একটা যুগের প্রতিনিধি ছিলেন। লীলা মজুমদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তাঁর। বেলা দে-র হাতের রান্নায় ম্যাজিক ছিল। তেমন একজন মানুষকে অসম্ভব প্রতিকূলতার মধ্যে শেষ জীবন কাটাতে হয়। এমন আইকনিক চরিত্রেই ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে দেখার জন্য যে আলাদা কৌতূহল থাকবে, তেমনটা বলাই যায়।
