সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশের প্রথম সারির তারকারা চুপ থাকলেও বলিউড-দক্ষিণ মিলিয়ে বেশ কজন তারকা প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। এহেন 'পৈশাচিক' কর্মকাণ্ড, বর্বর উল্লাসের ছবি দেখেও কেন তারকামহলে সেরকমভাবে কোনও উচ্চবাচ্চ্য নেই? প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন টেলিপর্দার 'অনুপমা' রূপালি গঙ্গোপাধ্যায়। ক্ষুব্ধ অভিনেত্রীর প্রশ্ন, "হিন্দুদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কেউ সরব হচ্ছেন না কেন? আপনারা প্যালেস্তাইন কিংবা অন্যান্য দেশের হয়ে প্রতিবাদ করতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশের হিন্দু নির্যাতনের বেলায় চুপ কেন?"
ওসমান হাদির মৃ্ত্যুর পর থেকেই জ্বলছে বাংলাদেশ। এমন আবহে দীপু দাসের নারকীয় হত্যাকাণ্ড কাঁপন ধরিয়েছে গোটা বিশ্বে। হিন্দু যুবককে গণপিটুনি দিয়ে খুনের পর পোড়া মুণ্ডু ও ধড় নিয়ে 'মৌলবাদী পশু'দের উল্লাস দেখে স্তম্ভিত সভ্য সমাজ! নারকীয় এই ঘটনা নিয়ে এবার প্রতিবাদে মুখর টেলিপর্দার 'অনুপমা'। পদ্মাপাড়ের এহেন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে অভিনেত্রীর সংযোজন, "প্রথমে দীপু দাস বলি হলেন, তারপর আবারও রোমহর্ষক ঘটনার খবর প্রকাশ্যে এসেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই এহেন ঘটনা ঘটে চলেছে। এর আগেও আমরা এই ধরনের ঘটনার বেশ কয়েকটি ভিডিও দেখেছি। আমি জানি না কেন এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হচ্ছে না? এবার আমাদের নিজেদের পাশে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। হিন্দুদের উচিত হিন্দুদের পাশে দাঁড়ানো। একে-অপরের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো। বুঝতে পারি যে ভালোবাসাই একমাত্র ধর্ম। কিংবা দয়াই একমাত্র জাতপাতের সংজ্ঞা হওয়া উচিত। অন্তত আমরা সেটাই বিশ্বাস করি। কিন্তু হিন্দুদের সঙ্গে যখন অনবরত কিছু ঘটছে, তখন মানুষ কীভাবে চুপ থাকে?"
দিন কয়েক ধরেই ইউনুসের দেশের 'কাণ্ড-কারখানা' দেখে ছিছিক্কার উঠেছে আন্তর্জাতিক মহলেও। এমতাবস্থায় রূপালি মনে করিয়ে দিলেন, "আমরা দেখেছি কিভাবে পালঘরে সাধুদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছিল। তবে যখনই হিন্দুদের সঙ্গে কিছু ঘটে, হঠাৎ সবাই চুপ করে যায়। কীভাবে? সেটাই বুঝতে পারি না। এখনই সময়, এহেন নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতি প্রতিবাদ করুন।"
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সঙ্গে চলে স্লোগান। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত সভ্য সমাজ।
