সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত জানুয়ারি মাস থেকেই সংবাদের শিরোনামে শরিফুল ইসলাম শেহজাদ। গোটা দেশের কাছে সেই ব্যক্তি সইফ আলি খানের বাড়ির 'আততায়ী' বলে পরিচিত হলেও নবাব খোদ তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেছিলেন, "বেচারা, ওর জীবন আরও অনেক বেশি বিপর্যস্ত।" শোনা যায়, শরিফুল আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। অশান্ত পরিবেশে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন দুটো পয়সা রোজগারের জন্য। সিসিটিভি ফুটেজের ছবি দেখে তাঁর বাবা রুহুল আমিনও ওই একই দাবি করেছিলেন যে 'ছেলে নির্দোষ'। শুক্রবার সেই শরিফুলই মুম্বই নিম্ন আদালতের কাছে জামিনের আবেদন জানিয়েছেন। মামলার শুনানি পয়লা এপ্রিল।

আদালতের কাছে শরিফুলের আবেদন, তিনি কোনও অপরাধ করেননি। তাঁর বিরুদ্ধে গোটা মামলাটাই মনগড়া। প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল, বাংলাদেশের নাগরিক শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সইফ আলি খানের হামলাকারী? বিশেষ করে তথাকথিত একটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিপোর্ট ফাঁস হওয়ার পর থেকে রীতিমতো প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে হয়েছিল পুলিশকে। এবার মুম্বই নিম্ন আদালতের কাছে জামিনের আবেদনে লেখা হয়েছে, "এফআইআরটি স্পষ্টতই মিথ্যে এবং শরিফুলের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আবেদনকারী তদন্তে পূর্ণসহযোগিতা করেছেন। অতএব, তাকে জেলবন্দি রেখে কোনওরকম কার্যসিদ্ধি হবে না।" শরিফুল এও জানিয়েছেন যে, জামিন পেলে আদালতের নির্দেশ মাফিকই চলবেন তিনি।
সম্প্রতি একা সাক্ষৎকারে ১৬ জানুয়ারির মাঝরাতের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বলিউড নবাব। সেখানেই তিনি জানান যে, "আমি মনে করি না, আমার জীবনের কোনও ঝুঁকি রয়েছে। আমি কোনও হুমকির মুখেও নেই। আরহ এই ঘটনায় আমার জীবনে কোনও পরিবর্তন হয়নি। হওয়াও উচিত নয়! তবে ওই ব্যক্তি পরিস্থিতি শিকার হয়ে জীবনে হতাশা থেকেই আমার বাড়িতে চুরি করতে এসেছিল। এটা কোনও পূর্বপরিকল্পিত আক্রমণও ছিল না। আমার মনে হয়, ও শুধু আমার বাড়িতে চুরি-ডাকাতি করতেই ঢুকেছিল। আর সেটাই ওর ভুল হয়ে গিয়েছে। বেচারা, ওর জীবন আমার চেয়েও বেশি বিপর্যস্ত।"
গত জানুয়ারি মাসেই সইফের বাড়ি থেকে পাওয়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট ধৃত শরিফুলের সঙ্গে মেলেনি। মুম্বই পুলিশ নবাবের বাড়ি থেকে সম্ভাব্য হামলাকারীর ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্টের নমুনা সংগ্রহ করে। এদিকে ধৃত শরিফুল ইসলাম শেহজাদের ১০টি আঙুলের ছাপও পাঠানো হয়েছিল। ওই সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করে, সইফের বাড়ি থেকে পাওয়া ১৯টি নমুনার একটাও মিলছে না শরিফুলের সঙ্গে। যদিও সেই ফিঙ্গারপ্রিন্টের গড়মিলের ত্বত্ত্ব উড়িয়ে দিয়েছিলেন মুম্বই পুলিশের এসিপি। এবার শরিফুলের জামিনের আবেদনের খবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের একবার প্রশ্ন উঠেছে, শরিফুল ইসলাম শেহজাদ কি আদৌ সইফ আলি খানের হামলাকারী?