সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ওসমান হাদির মৃ্ত্যুর পর থেকেই জ্বলছে বাংলাদেশ। এমন আবহে দীপু দাসের নারকীয় হত্যাকাণ্ড কাঁপন ধরিয়েছে গোটা বিশ্বে। হিন্দু যুবককে গণপিটুনি দিয়ে খুনের পর পোড়া মুণ্ডু ও ধড় নিয়ে 'মৌলবাদী পশু'দের উল্লাস দেখে স্তম্ভিত সভ্য সমাজ! নারকীয় এই ঘটনা নিয়ে বাংলাদশের শিল্পীমহলে সেরকম প্রতিবাদী আওয়াজ না শোনা গেলেও এবার বড়দিনে 'সান্টা'র কাছে স্বভূমে শান্তি বয়ে আনার প্রার্থনা জানালেন জয়া আহসান।
ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানাতে সোশাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটা ছবি শেয়ার করেছিলেন জয়া। সেখানেই ক্যাপশনে শুভেচ্ছার মোড়কে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেত্রী। সেখানে উল্লেখ, 'বড়দিনে শান্তি আসুক দেশে, সারা পৃথিবীতে।' কতিপয় শব্দেই তিনি নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিলেন জয়া আহসান। শিল্পী হিসেবে হয়তো কিছু গণ্ডি মেনে চলতে হয়, তাই এযাবৎকাল দ্বেষের বাংলাদেশ নিয়ে কোনও শব্দ খরচ না করলেও তিনি যে মর্মাহত, সেটা বুঝিয়ে দিলেন।
চব্বিশ সালে বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থান কালেও চুপ ছিলেন অভিনেত্রী। হাসিনা পতনের অধ্যায়ে বাংলাদেশের বহু শিল্পী প্রতিবাদ করে সেদেশে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। প্রতিবাদের মাশুল হিসেবে আইনি শাস্তিও পেতে হয় একাংশকে। শিল্পীমহলের একাংশ আবার দেশ থেকে দূরত্ব বাড়িয়েছিলেন এমতাবস্থায়। তবে এবার কলকাতা থেকেই নিজের জন্মভূমির অশান্ত পরিবেশ দেখে উদ্বিগ্ন জয়া। সে প্রেক্ষিতেই বড়দিনের সঙ্গে শান্তির বার্তা জুড়ে দিয়েছেন অভিনেত্রী। তাঁর শেয়ার করা পোস্টে ধরা পড়ল ক্রিসমাস সেলিব্রেশনের একগুচ্ছ ঝলক।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। সঙ্গে চলে স্লোগান। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত সভ্য সমাজ।
