সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর শেষে অন্তত একটা আশার আলো দেখা গেল। জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change) এবং তার অভিশাপ নিয়ে তোলপাড় ফেলা দুনিয়ায় সুখবর শোনাল রাষ্ট্রসংঘ (UN)। বছর পাঁচ আগের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে যা যা লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল, তার অনেকটা কাছাকাছি পৌঁছনো গিয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। ফলে এই শতাব্দীর শেষে বিশ্বের সামগ্রিক তাপমাত্রা ২.১ ডিগ্রির বেশি বাড়বে না বলেই আশা।
কয়েকদিন আগে G-20 সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন যে পরিবেশ রক্ষায় ভারত প্যারিস জলবায়ু চুক্তির (Paris Climate Agreement) বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পর, তার চেয়ে বেশি কাজও করেছে। সেসময় আঙুল উঠছিল প্রথম বিশ্বের দেশগুলির দিকে, যারা চুক্তি অনুযায়ী অনেক কিছুই মেনে চলছে না। তবে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে, চিনের মতো দেশও উষ্ণায়ন রোধে নিজেদের মতো করে সদর্থক পদক্ষেপ নিচ্ছে, কার্বন নিঃসরণ কমাতে উদ্যোগী হচ্ছে। অন্তত তাপমাত্রার রেকর্ড তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। নইলে বিশ্বের তাপমাত্রা নির্দিষ্ট হারে বেঁধে রাখার আশা দেখা যেত না।
[আরও পড়ুন: গবেষণায় বাজিমাত, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের অধ্যাপকই এখন বিশ্বসেরা বিজ্ঞানী]
২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল, ২১০০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়তে দেওয়াই যাবে না। তবে পরবর্তী সময়ে উষ্ণায়নের গতি দেখে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পারে, ২০১ ডিগ্রির মধ্যে বেঁধে রাখা সম্ভব নয়, অন্তত ২.৭ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়বেই। তার মধ্যে ২০১৮ সালেই সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটেছিল। কিন্তু তারপর পরিবেশ বাঁচাতে হাজারও সতর্কবার্তা, প্রতিবাদ, আন্দোলনের চাপে পড়ে হয়ত প্রথম বিশ্বের দেশগুলি বুঝতে পেরেছে, রাশ না টানলে বড় বিপদ আসন্ন। তাই নানা দেশ নানাভাবে কাজে নেমেছে। যেমন, চিনের লক্ষ্য ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ সম্পূর্ণ শূন্য করে দেওয়া। আবার জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এই কাজ করে ফেলতে চায় ২০৫০এর মধ্যে। এই মুহূর্তে সবুজ বিপ্লব ঘটাতে ব্রিটেন একাধিক সদর্থক পদক্ষেপ নিচ্ছে। বিশ্বের তাপমাত্রা সাম্প্রতিকতম রেকর্ড বলছে, ২১০০ সালের মধ্যে গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি ২.১ ডিগ্রির মধ্যেই বেঁধে রাখা যাবে।
[আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণ! থাইল্যান্ডে মিলল ৫ হাজার বছরের পুরনো তিমির কঙ্কাল]
তবে কোনও কোনও দেশ এখনও সচেতন নয়। সৌদি আরব, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়ার পারফরম্যান্সে চিন্তা থাকছেই। তারা এখনও ইচ্ছেমতো তেলের পাইপ লাইন বসাচ্ছে, তৈরি করছে কয়লাখনি, কারখানা সম্প্রসারণ করছে। অর্থাৎ, কার্বন নিঃসরণ বেড়ে যায়, এমনই কাজে এসব দেশের কোনও লাগামই নেই এখনও। এই দেশগুলিকে সতর্ক করেছে রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কমিটি।