সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেউ সঙ্গে থাকতে চেয়েছিল। কেউ বা ধরি মাছ না ছুঁই পানি করে দায় সেরেছে। কিন্তু কোনও কিছুই তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবারই রাষ্ট্রপতির দরবারে নোট বাতিলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কংগ্রেস-সিপিএম আগেই দূরত্ব বজায় রেখেছিল। যাব কি যাব না করে শেষমেশ মমতার অভিযানে অবশ্য প্রতিনিধি পাঠালেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আপের তরফে এদিনের অভিযানে ছিলেন ভগবন্ত মান। ছিলেন এনসি-র তরফ থেকে ওমর আবদুল্লা। আঞ্চলিক শক্তিগুলিকেই ঐক্যবদ্ধ হতে দেখা গেল এদিনের অভিযানে। এঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রপতির মুখোমুখি হয়ে মমতা পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন তাঁর সামনে। জমা দেন স্মারকলিপিও।
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর তিনি জানান, “পুরো বিষয়টিই তিনি শুনেছেন। মনে রাখবেন রাষ্ট্রপতি একজন পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদও বটে। অর্থমন্ত্রীও ছিলেন। দেশের মানুষকে যে কী ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তা অনেকের থেকে ভাল জানেন তিনি।” এদিন দিল্লির মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রকে আক্রমণের সুযোগ অবশ্য হাতছাড়া করলেন মমতা। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে জানালেন, “আমরাও কালো টাকার বিরুদ্ধে। কিন্তু কালো টাকার কারবারিদের ধরতে সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু এটা কী হচ্ছে? এ তো শুধু অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থাই নয়, অর্থনৈতিক দুর্যোগ চলছে দেশে। আগে টাকার ব্যবস্থা করে, সংসদে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারত। তাতে সাধারণ মানুষের এমন ভোগান্তি হত না। বাচ্চার খাবার কেনার পয়সা পর্যন্ত নেই মানুষের হাতে।” এদিন আরও একবার কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত পরিকল্পনাহীন বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে এই সরকার। আগে এটিএম মানে ছিল অল টাইম মানি, এখন মানে দাঁড়িয়েছে আয়েগা তো মিলেগা।” এদিন দিল্লিতে দাঁড়িয়েই কেন্দ্র সরকারকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সঙ্গে তুলনা করেন তিনি। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “অঘোষিত সম্পত্তি ঘোষণার ফলে যে ৬৫ হাজার কোটি টাকা জমা পড়ার কথা, তার এক পয়সাও জমা পড়েনি।”
কেন্দ্রর এই সিদ্ধান্ত তাই প্রত্যাহারের দাবি এদিনও জারি রাখলেন মমতা। পাশাপাশি সংসদে এ ব্যাপারে যে তৃণমূল কংগ্রেস মুলতবি প্রস্তাব আনবে তাও জানিয়ে রাখলেন।