সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাথমিকে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিল নিয়ে এবার ডিএ আন্দোলনকারীদের নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, চাকরি বাতিলের নির্দেশে প্রয়োজনীয় আইনি লড়াই লড়বেন। চাকরিহারা ও তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে মমতা বললেন, “কেউ ভেঙে পড়বেন না। পাশে আছি।”
নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে প্রায় দেড় বছর ধরে তোলপাড় বাংলা। গত সপ্তাহে প্রশিক্ষণহীন ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল ঘোষণা করে কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৪ সালের টেট থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এবং ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্তদের মধ্যে যাঁদের প্রশিক্ষণ নেই, তাঁদেরই চাকরি বাতিল করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে তাঁর কড়া নির্দেশ, আগামী ৩ মাসের মধ্যে নতুন প্যানেল থেকে নিয়োগ করতে হবে। কলকাতা হাই কোর্টের রায়ের পরই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল ইঙ্গিত দেন যে পর্ষদ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
[আরও পড়ুন: বাড়ি থেকে দিলীপের দলিল উদ্ধার নিয়ে বিস্ফোরক ধৃত প্রসন্ন, কী বললেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ মিডলম্যান?]
সোমবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে সেই প্রসঙ্গেই মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিএ আন্দোলনকারীদের কড়া বার্তা দিলেন তিনি। বললেন, “এবারও ৩ শতাংশ ডিএ পেয়েছে ওরা। তারপরও রোজ লড়ছে। আর আজ ওদের জন্যই ৩৬ হাজার চাকরি গেল। এতগুলো পরিবার অসহায়। তাই আমরা ডিভিশন বেঞ্চে যাব।” এরপরই উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “শুনছি অনেকে ডিপ্রেশনে ভুগছে। আপনারা ভেঙে পড়বেন না, মন খারাপ করবেন না। আমাদের সরকার মানবিক। মানুষের পাশে থাকে। আমরা আইনি লড়াই করব। আশা করি আপনারা ভাল থাকবেন।” মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ৩৬ হাজার চাকরিহারার পাশেই থাকবেন তিনি। সেই সঙ্গে খানিকটা ফিরহাদ হাকিমের সুরেই ডিএ আন্দোলনকারীদের বিঁধেছেন। বলেছেন, প্রয়োজনের কেন্দ্রের চাকরি বেছে নিতে, তাতে বেশি ডিএ মিলবে। সাফ জানিয়েছেন, ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।
এদিকে ডিএ আন্দোলনে যোগ দেওয়া এক শিক্ষকের বদলির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সে বিষয়ে সুর চড়িয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। অভিযোগকারীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন বিচারপতি। পাশাপাশি বদলির নির্দেশে স্থগিতাদেশও দেন তিনি। প্রসঙ্গত, ডিএ আন্দোলনে যুক্ত থাকায় দূরে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাওড়ার প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক অমিতকুমার ঘোষ।