স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘক্ষণ কন্ট্যাক্ট লেন্স পরে থাকার জন্য মারাত্মক চোখের সংক্রমণের শিকার হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসার পর এখন তিনি বাড়িতেই বিশ্রামে রয়েছেন। কিন্তু সম্পূর্ণ সুস্থ নন। বুধবার বাণিজ্য সম্মেলনের শেষদিনে ধনধান্য অডিটোরিয়ামে সারাদিনই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের অসুস্থতা নিয়ে দৃশ্যতই তিনি ছিলেন উদ্বিগ্ন। টেলিফোনে কয়েকবার কথা বলার পর সন্ধ্যায় অভিষেকের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী।
এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশন। বিধানসভা ক্ষেত্রগুলি জুড়ে বিজয়া সম্মিলনীর পর এটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। অভিষেকেরই সব দেখাশোনা করার কথা। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কীভাবে সেই কর্মসূচি হবে তা নিয়ে এদিন তাঁর সঙ্গে কথা বলে নেন মমতা। তৈরি হয় বক্তার তালিকা। দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাসকে সব দেখে নিতে বলেন মমতা। অধিবেশন পরিচালনা করবেন রাজ্য তৃণমূল সভাপতি সুব্রত বক্সি। বস্তুত কয়েক বছর আগে জাতীয় সড়কে পথদুর্ঘটনায় বাম চোখে আঘাত পাওয়ার পর নানা সমস্যায় ভুগছেন অভিষেক। একাধিকবার দেশ-বিদেশে অপারেশনও হয়েছে। কিছুদিন আগে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলন আমেরিকাতে। এইসব কারণেই তাঁকে কন্ট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে হয়। সূত্রের খবর, সময়মতো সেই লেন্স না খোলাতেই চোখের শিরা ফুলে রক্ত জমে যায়। এতটাই বাড়াবাড়ি হয় যে, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে টানাপোড়েন, প্রেমিকাকে গুলি করে খুনের পর আত্মঘাতী প্রেমিক]
পঞ্চায়েত নির্বাচন ও পুজোর পর আজ, বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোরে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশন। লোকসভা ভোটের মাসচারেক আগে এই ‘মেগা-মিটিং’ থেকে দলীয় কর্মীদের মাঠে নেমে পড়তে এই সভা থেকে নির্দেশ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সমস্ত সাংসদ, মন্ত্রী, বিধায়ক, রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্ব, ছাত্র-যুব-মহিলা ছাড়াও ট্রেড ইউনিয়ন-জয় হিন্দের মতো সমস্ত শাখা সংগঠনের শীর্ষ নেতা-নেত্রী, পুরসভার কাউন্সিলর, পঞ্চায়েতের প্রধান, জেলাপরিষদ সদস্য ও ব্লক তৃণমূল সভাপতিদের মেগা মিটিংয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এজন্য জেলা তৃণমূল সভাপতি ও শাখা সংগঠনের নেতৃত্ব মারফত আমন্ত্রণপত্র বিলি করা হয়েছে। সকাল ১১টা থেকে ইন্ডোরে প্রবেশ করে আসন নিতে বলা হয়েছে আমন্ত্রিতদের। বুধবার রাতেই উত্তরবঙ্গ তথা দক্ষিণবঙ্গেরও দূরের জেলার প্রতিনিধিরা দলে দলে এসে গিয়েছেন। সভার জন্য নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের কর্তাদের সঙ্গে এদিন দুপুরেই ইন্ডোরে বৈঠক করেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
লোকসভা নির্বাচনে এবার তৃণমূলের মূল ইস্যু যে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা তা গত কয়েকমাসে দলের নানা কর্মসূচিতে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলে নবজোয়ার ও দিল্লি-কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আন্দোলনেও সেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনাই ছিল প্রধান ইস্যু। ইন্ডোরের সভা থেকেই বস্তুত সেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার পাশাপাশি সিবিআই-ইডির বিরুদ্ধে মমতা সরব হবেন বলেও অনুমান। এখানেই শেষ নয়, আগামী তিনমাস ভোটার তালিকার কাজ ছাড়াও নানা দলীয় কর্মসূচির ঘোষণা করবেন তৃণমূল নেত্রী। দিল্লিতেও বড় মাপের কেন্দ্রীয় আন্দোলনের ঘোষণা করতে পারেন তিনি। কারণ, আগেই স্বয়ং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এর পর দিল্লিতে কেন্দ্রবিরোধী যে আন্দোলন হবে, তার নেতৃত্বে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।