চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায় ও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়: বিধানসভা ভোটের আগে কয়লা কাণ্ডের (Coal scam) কিনারা করতে আরও তৎপর সিবিআই (CBI)। দুর্গাপুর, আসানসোল শিল্পাঞ্চলের কয়লাখনি থেকে কত পরিমাণ কয়লা চুরি হয়েছে, তার হিসেব কষতে এবার খনি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তদন্ত শুরু করলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সোমবারের পর মঙ্গলবারও চলল তল্লাশি। ইসিএলের শীর্ষকর্তারাও শামিল হয়েছেন এদিনের অপারেশনে।
মঙ্গলবার বেলায় সিবিআইয়ের ডিআইজি অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে চলে তল্লাশি। ইসিএলের (ECL)দায়িত্বে থাকা কয়লাখনি থেকে কত পরিমাণ কয়লা চুরি হয়েছে, জানতে এবার খনিতে নেমে মাপজোক করতে চাইছে সিবিআই। প্রথম দফায় সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের অণ্ডাল থানা এলাকার কাজোরা অঞ্চলের হরিশপুর, লছিপুর এলাকায় ৩০ জনের একটি দল অভিযান চালায়। মঙ্গলবারও তাঁরা খনিতে যান। রাঁচি থেকে আসা এই দলটি সিবিআইয়ের সঙ্গে খনিতে নেমে বিশেষ পদ্ধতিতে মাপজোক করবে। কত পরিমাণ কয়লা বেআইনিভাবে খনি থেকে কাটা হয়েছে তার একটা হিসাব পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। এই সমীক্ষার মাধ্যমে জানা যাবে কত দিন ধরে চুরি হয়েছে কয়লা।
[আরও পড়ুন: লোকাল ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে কৃষ্ণনগরের জালালখালিতে অবরোধ, আটকে বহু ট্রেন]
সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা রীতিমতো ফিতে দিয়ে বেআইনি কয়লা খাদানের মাপ নেন। বেআইনি খাদানের গভীরতাও মাপা হয়। সরকারি জমি জরিপ কর্মীদের এনে পরিমাপের কাজ চলে। এরপরই দুই নম্বর জাতীয় সড়কের ২০০ মিটার দূরে কাজোরার টপ লাইনে একটি বেআইনি খাদানের মাপও নেন তাঁরা। এদিন প্রায় তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ জনের একটি দল সিআইএসএফ বাহিনী নিয়ে এই জরিপ ও সমীক্ষার কাজ চালান। এই পরিমান বেআইনি খাদান থেকে কতটা পরিমাণ কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে, তাও খতিয়ে দেখেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা। এদিন সকাল থেকে প্রায় ছয় ঘন্টা ধরে সমীক্ষাপর্ব চালান। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম বর্ধমানের সমগ্র খনি এলাকা-সহ পুরুলিয়াতেও এই ধরনের সমীক্ষা হবে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: লটারি কেটে রাতারাতি কোটিপতি! দুর্দিন কাটল মাছবিক্রেতার]
সিবিআই কর্তাদের বক্তব্য, তদন্তের জন্য এই সমীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, কত পরিমাণ কয়লা চুরি হয়েছে, তার হিসেব থেকেই জানা যাবে কত কোটি টাকার সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে ‘লালা অ্যান্ড কোম্পানি’। সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্য জানানো হবে আদালতকেও। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের এই দলটি এদিন প্রথমে পশ্চিম বর্ধমানের কাজোরায় ইসিএল জেনারেল ম্যানেজারের দফতরে বৈঠক করবে। তারপর শুরু হবে সমীক্ষা। পশ্চিম বর্ধমান, আসানসোল, দুর্গাপুর, রানিগঞ্জে যতগুলি কয়লা খনি থেকে কয়লা চুরি হতো, প্রত্যেকটিতে চলবে সমীক্ষা।