রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: জন্মদাত্রী মায়ের সামনে তারই প্রেমিকার হাতে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ধর্ষিতা হয়েছেন, কলেজ ছাত্রীর এমনই অভিযোগে চাঞ্চল্য আলিপুরদুয়ার শহরে। নির্যাতিতা ওই কলেজ ছাত্রী এবার আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে মামলা শুরু করেছে পুলিশ। নির্যাতিতার মা ও অভিযুক্ত প্রেমিকা পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার (SP) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই এই অভিযোগের ভিত্তিতে কেস শুরু করে তদন্ত শুরু করেছি।”
জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা বর্তমানে আলিপুরদুয়ার শহরের একটি কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী (College Student)। ছোটবেলায় তাঁর বাবা ও মা আলাদা হয়ে যান। তার পর থেকে একমাত্র ভাই ও মায়ের সঙ্গে থাকেন। ছাত্রীর অভিযোগ, নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মায়ের প্রেমিক প্রথম তাকে ধর্ষণ করে। মায়ের ‘গুণধর’ বয়ফ্রেন্ডের নাম রবি ঘোষ। তিনি শহরের বেলতলা এলাকার বাসিন্দা। ম্যাকউইলিয়াম হাইস্কুলের উলটোদিকে ফুটপাতে কাপড়ের ব্যবসা করেন অভিযুক্ত রবি ঘোষ। রবি নিজে বিবাহিত ও তিন সন্তানের বাবা। তার পরেও নির্যাতিতার মায়ের সঙ্গে তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক (Extra Marrital Affair) রয়েছে।
[আরও পড়ুন: ট্রেনেই আইবুড়োভাত, আর্শীবাদের পর মাছ-মিষ্টিতে ভূরিভোজ, ভাইরাল ভিডিও]
নির্যাতিতা অভিযোগে জানিয়েছে, ক্লাস নাইন থেকে অভিযুক্ত তাকে নিয়মিত ধর্ষণ করে। আর এই ঘটনায় তার মায়েরও সায় রয়েছে। কখনও কখনও মা-ই জোর করে তাকে প্রেমিকের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করত বলেও লিখিত অভিযোগে জানিয়েছে সে। সম্প্রতি আবার গোপন ছবি সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকিও দেয় মায়ের প্রেমিক। বিষয়টি জানতে পেরে নির্যাতিতার কয়েকজন বান্ধবী তার পাশে দাঁড়ায়। তাদের নিয়েই বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার মহিলা থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন নির্যাতিতা। এদিন থানায় অভিযোগ জমা দেওয়ার সময় নির্যাতিতার বাবা ও ভাইও সঙ্গে ছিলেন।
নিদারুণ যৌন অত্যাচারের শিকার কলেজ ছাত্রী বলেন, “মা আমাকে তার বয়ফ্রেন্ডের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করত। কখনো কখনো মা আবার বাধাও দিত। কিন্তু মার বয়ফ্রেন্ড রবি ঘোষ নাছোড় ছিল। আমার শৈশব শেষ করে দিয়েছে ও। আমার বান্ধবীরা আমার পাশে দাঁড়ানোয় আমি সাহস করে থানায় অভিযোগ জানালাম। আমি রবি ঘোষের কড়া শাস্তি চাই।”
[আরও পড়ুন: প্রয়াত সোমনাথবাবুর সিদ্ধান্তকে ঢাল করেই সংসদে বলতে দেওয়া হল না মহুয়াকে]
নির্যাতিতাকে আইনি সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন আলিপুরদুয়ার আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবব্রত অধিকারী। তিনি বলেন, “মেয়েটি বর্তমানে সাবালিকা। কিন্তু নাবালিকা অবস্থা থেকে সে নির্যাতনের শিকার। তাই আদালতের কাছে আমরা এই মামলায় পকসো (POCSO) ধারা যুক্ত করার আবেদন জানাচ্ছি। হাড় হিম করা একটি অভিযোগ। এর বেশি আর কিছু বলতে চাই না।”