কৃষ্ণকুমার দাস: বিজেপির (BJP) কর্মসূচির ধাক্কা! কলকাতা পুরভবনে (KMC) ঢুকতে না পেরে মেয়ের ডেথ সার্টিফিকেট না পেয়ে ফিরতে বাধ্য হলেন ডায়মন্ডহারবার থেকে আসা আনোয়ার হোসেন। স্ত্রীর ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য পুরকর্তারা ডেকে পাঠালেও সঙ্গে সচিত্র পরিচয়পত্র না থাকায় পুরভবনের দোতলায় পৌঁছাতে পারলেন না বজবজ চড়িয়াল গ্রামের ভাগ্যহীন স্বামী সঞ্জয় রক্ষিত। সোমবার সারাদিনে নিরাপত্তার বেষ্টনি পেরিয়ে ট্রেজারিতে পৌঁছাতে না পেরে বেলেঘাটা, মৌলালি ও বড়বাজারের অনেকেই পুরকর জমা দিতে পেরে ফিরে গিয়েছেন। ভোটার বা আধার কার্ডের মতো সচিত্র পরিচয়পত্র সঙ্গে না থাকায় সনৎ মণ্ডল, আক্কাস মাসুদ, নমামী চক্রবর্তীরা কেউই ঢুকতে পারেননি পুরভবনে।
সাধারণ নাগরিকদের এই চরম দুর্ভোগের দায় অবশ্য পুরভবনমুখী ‘উচ্ছ্বশৃঙ্খল’ বিজেপি নেতা-কর্মীদের ওপর চাপিয়েছেন পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। বলেছেন, “রাস্তা দখল করে অ্যাম্বুল্যান্স যেতে না দেওয়া উচ্ছৃশৃঙ্খল বাহিনী যদি ঢুকে ট্রেজারি লুঠ করত তা হলে কী হত? তবে পুলিশ নিজেদের অনেক বেশি সংযত রেখে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল।” পরে ফিরহাদ দাবি করেন, নিরাপত্তার কারণে একটা গেট বন্ধ থাকলেও অন্য গেট দিয়ে দরকার সবাই ঢুকেছেন।
[আরও পড়ুন: হাওড়ায় ১৪ বছরের ক্যারাটে খেলোয়াড়ের রহস্যমৃত্যু, বন্ধুদের ব্ল্যাকমেলের শিকার?]
দক্ষিণের মোমিনপুর থেকে আসা সন্তোষ জয়সোয়াল, বালিগঞ্জের সর্বানী মুখার্জিদের পুরভবনের বিল্ডিং বিভাগে জরুরি শুনানি ছিল। কিন্তু রাস্তায় যানজট হওয়ায় ও ব্যারিকেড দিয়ে প্রবেশপথের অনেক দূরে বন্ধ থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে ঢুকতেই পারেননি অফিসারের কাছে। সকাল দশটার অনেক আগে থেকেই পুরসভার সমস্ত গেটের দখল নিয়েছিল পুলিশ। পুরভবনের বাইরে চার দিকেই জনা কয়েক ডিসি’র নেতৃত্বে প্রায় হাজার খানেক পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন ছিল। বেলা বারোটার পর কার্যত ঢোকা ও বের হওয়া নিষিদ্ধ হয়ে যায়। বহু পুরকর্মী সচিত্র পরিচয়পত্র সঙ্গে না নিয়ে বের হওয়ায় ঢোকার সময় দুর্ভোগে পড়েন। পুরকর্মীর নাম নিয়ে ভিতরে ঢুকে একদল বিজেপি কর্মী বিক্ষোভ দেখাতে পারেন বলে খবর ছিল পুলিশের কাছে। তাই পরিচয়পত্র ছাড়া বিকেল পাঁচটার আগে কাউকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি। দেবাঞ্জনকান্ডের জেরে বুধবার থেকে পুরভবনে ঢোকা ও অফিস করার ক্ষেত্রে কমিশনারের জারি করা ১৩ দফা নির্দেশাবলী কার্যকর হচ্ছে। বস্তুত বিজেপির অভিযান ঘিরে সেই বিজ্ঞপ্তি চালুর মহড়া হয়ে গেল।