গৌতম ব্রহ্ম: পুলিশের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। অতি সক্রিয়তা থেকে নিষ্ক্রিয়তা, এমনকী টাকা তোলার মতো অভিযোগেও বিদ্ধ পুলিশের একাংশ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি একাধিক প্রশাসনিক বৈঠকে পুলিশের একাংশের কাজে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমনকী বেআইনি কাজে যুক্ত থাকলে গ্রেপ্তারির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। এবার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর জন্য চার সদস্যের কমিটি গড়ল রাজ্য। নবান্ন সূত্রের খবর, কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম রায়। কমিটিতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে রাখা হয়েছে। সাধারণ মানুষ এই কমিটির কাছে পুলিশের বিরুদ্ধে যেকোনও অভিযোগ জানাতে পারবেন।
সম্প্রতি নবান্নের এক প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী হকারদের থেকে পুলিশের চাঁদা তোলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। জানা গিয়েছে, কলকাতা থেকে জেলা, একাধিক থানার বিরুদ্ধে মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ এসে পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তারপরই মুখ্যমন্ত্রী কমিটি গড়ার কথা ভাবতে শুরু করেন। এই কমিটি গঠন হলে পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার প্রবণতা কমবে। আইনজ্ঞদের অন্তত এমনই পর্যবেক্ষণ। তাঁদের দেওয়া সূত্র বলছে, ১৯৯৬ সালে প্রকাশ সিং মামলায় সুপ্রিম কোর্ট পুলিশি ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একগুচ্ছ নির্দেশ দেয়। তারমধ্যে প্রতিটি রাজ্য ও তার জেলাগুলিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ শুনে পদক্ষেপ করার জন্য কমিটি গড়ার সুপারিশ করা হয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে থানাগুলিতে পুলিশের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে।
[আরও পড়ুন: সংসদে দাঁড়িয়ে ‘স্টুপিড’ কটাক্ষ, কংগ্রেস সাংসদকে নিশানা করে বিতর্কে অভিজিৎ]
মূলত অভিযোগ না নেওয়া, প্রভাবশালীর পক্ষ নিয়ে অপরপক্ষকে হেনস্তা করা, মিথ্যে মামলা দেওয়ার মতো অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। লক আপে পুলিশি অত্যাচারে বন্দিমৃত্যুর মতো সাংঘাতিক অভিযোগও বিরল নয়। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশের বিরুদ্ধে কখনও নিষ্ক্রীয়তা আবার কখনও অতি সক্রিয়তার মামলা হয় হাই কোর্টে। সূত্রের খবর, বর্তমানে কলকাতা হাই কোর্টে পুলিশ সংক্রান্ত এই মামলার সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি। যা নিয়ে সম্প্রতি এক বিচারপতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জানা গিয়েছে, প্রথমে জেলাস্তরের কমিটি অভিযোগ গ্রহণের পর তারা সমস্যা সামাধানের চেষ্টা করবেন। যদি সেখানে জট না কাটে তখন তা রাজ্য স্তরের কমিটির কাছে আসবে।