সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: মেদিনীপুর কলেজমাঠে হাই ভোল্টেজ সভা। মূল আকর্ষণ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), সঙ্গে দীর্ঘ জল্পনা সত্যি করে বিজেপিতে যোগদানকারী শুভেন্দু অধিকারী। শনিবারের বারবেলায় এই মেগা শো’এ তৃণমূল এবং অন্যান্য দল থেকে একঝাঁক নেতা, বিধায়কদের যোগদান। ঘোষক বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো তালিকা ধরে যোগদানকারীদের নাম পড়ছেন একে একে। সকলেই ওই মঞ্চেই দলবদল করছেন। কিন্তু এ কী! বিজেপিতে (BJP) যোগদানকারী হিসেবে ঘোষিত উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল নেতা প্রফুল্ল বর্মন যে বসে জেলার দলীয় কার্যালয়েই! আরও একজনের নাম ঘোষণার পরও দেখা গেল, মোটেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে মেদিনীপুর যাননি। তালিকা তৈরিতে এমন গরমিল হল কীভাবে? ত্রুটি খুঁজতে ব্যস্ত তাঁরা।
শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহর সভায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের তালিকায় নাম ছিল উত্তর দিনাজপুরের (North Dinajpur) জেলা সহ-সভাপতি প্রফুল্ল বর্মনের। দুপুরে সেই নাম ঘোষণা হওয়ার পর সন্ধের দিকে রায়গঞ্জের তৃণমূল কার্যালয়ের সাংবাদিক বৈঠকে দেখা গেল, জেলা তৃণমূল (TMC) সভাপতি কানাইলাল আগরওয়ালের পাশে বসে রয়েছেন প্রফুল্ল বর্মন। তিনি সাংবাদিকদের জানালেন, ”আমি বিজেপিতে যাইনি, তৃণমূলেই আছি।” তবে এলাকায় গুঞ্জন, শুভেন্দু অধিকারীর অরাজনৈতিক সভাগুলোয় নিয়মিত আনাগোনা ছিল প্রফুল্লর। তিনি কার্যত গেরুয়া শিবিরের হয়েই কাজ করছেন। এখন দলের চাপে নিজের সেই অবস্থানের কথা অস্বীকার করছেন। সাংবাদিক বৈঠকের পর জেলার রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে – ওঁর আত্মা বিজেপিতে, শরীরটা রয়েছে তৃণমূলে।
[আরও পড়ুন: একঝাঁক তৃণমূল নেতার দলবদলের জের, জেলায়-জেলায় বিক্ষোভ, পড়ল পোস্টারও]
বেশ কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছিল বিধাননগরের পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস জানার ইস্তফাপত্র। তিনি পদ ছাড়ছেন বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে, এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু দেবাশিস জানা নিজে বারবার দাবি করছিলেন যে ভাইরাল হওয়া ওই ইস্তফাপত্রটি ভুয়ো, তাঁর নয়। তিনি তৃণমূল ছাড়েনওনি। এদিন মেদিনীপুরের সভায় বিজেপিতে যোগদানকারী হিসেবে ঘোষণা হয় তাঁর নামও। অথচ তিনি সেখানে নেই। কলকাতার বাড়িতেই বসে দেবাশিস জানা। যদিও এদিনের বিভ্রাট নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া তিনি দিতে চাননি। শাহর সভায় যোগদানকারী হিসেবে ঘোষিত আরেক নাম নিয়েও বিভ্রান্তি। সংখ্যালঘু নেতা ওয়াইজুল হক। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, তিনিও নাকি তৃণমূলেই আছেন। বিজেপি মিথ্যে ঘোষণা করেছে।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে আরও কমল করোনার অ্যাকটিভ কেস, বড়দিনের আগে স্বস্তি দিচ্ছে সুস্থতার হার]
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো হাইপ্রোফাইল ব্যক্তির হাই ভোল্টেজ সভা। সেই মঞ্চের ব্যানারে বানান বিভ্রাটের জন্য ইতিমধ্যেই হাসিঠাট্টা করতে ছাড়ছেন না কেউ। এবার বিজেপির অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিল যোগদানকারীদের নামের তালিকা। প্রশ্ন উঠছে, আগে থেকে এত প্রস্তুতি সত্ত্বেও কেন এমন ভুলভ্রান্তি?