অতুলচন্দ্র নাগ, ডোমকল: প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর সভার পরই উত্তপ্ত রানিনগর। মিছিলে লোক যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে সভা শেষে বাম-কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা রানিনগর থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। থানার গেট থেকে ভিতরে ইটবৃষ্টিও করা হয়। ওই ঘটনায় একাধিক পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। লাঠিচার্জও করে।
রানিনগর ২ ব্লকের নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান তথা কংগ্রেস নেতা জাহাঙ্গির ফকির জানান, “পুলিশের মারধরে ৮ জন কর্মী জখম হয়েছে। তার মধ্যে চারজনকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।” তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, কংগ্রেস কর্মীদের উসকানি দেওয়া হয়েছে। এদিকে, পুলিশের তাড়ায় বাম-কংগ্রেস কর্মীরা থানার সামনে থেকে সরে যান। রানিনগর হাসপাতাল মোড়ে অবস্থিত তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। ৮ জন বাম-কংগ্রেস সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিক্ষুব্ধরা রাস্তাতেও আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদেরও মারধর করা হয়। গোটা ঘটনায় শুক্রবার সন্ধেয় রানিনগর থানা থেকে হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত ব্যাপক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার মাটি, বাংলার জলের জয়’, ধূপগুড়িতে সবুজ ঝড়ে ভোটারদের ধন্যবাদ মমতার]
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী এই ঘটনাকে সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “গোধনপাড়ায় বাম-কংগ্রেসের একটি বিজয় সমাবেশ ছিল। ওই সমাবেশে যাওয়ার জন্য বড় একটি মিছিল রাস্তা ধরে যাচ্ছিল। কিন্তু পুলিশ ওই মিছিলে বাধা দেয়। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করে। কিছু গাড়িও ভেঙেছে। যার প্রেক্ষিতে মানুষ ক্ষোভপ্রকাশ করেছে। শুনেছি পুলিশ আমাদের বেশ কয়েকজন কর্মীকে মারধর করেছে।”
শুক্রবার বাম-কংগ্রেসের সভা ও তারপর থানার সামনে বিশৃঙ্খলা, তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় বেজায় চটেছেন রানিনগরের বিধায়ক সৌমিক হোসেন। তিনি বলেন, “কংগ্রেস নেতৃত্বের উসকানিতেই থানায় ও তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন ধরানো হয়েছে। পুলিশকে বলব এই নারকীয় ঘটনার নেপথ্যে যারা রয়েছে তাদেরও যেন গ্রেপ্তার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” তিনি আরও বলেন, “গোধনপাড়ার সভায় অধীর চৌধুরী বলেছেন, তৃণমূলের সন্ত্রাস বাংলার মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তাঁকে আমার প্রশ্ন, আপনার সভা শেষে রানিনগর থানা ও তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে যেটা হল এটাকে কী বলবেন? থানায় ভাঙচুর, পুলিশকে মারধর করা সন্ত্রাস নয়?”
দেখুন ভিডিও: