সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: শিক্ষকদের সাম্মানিক মাত্র ১৫০০ টাকা! আংশিক সময়ের শিক্ষক (Contractual Teacher) নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল! সাঁইথিয়া জিউই তরঙ্গিনী উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি জ্যোতির্ময় মণ্ডলের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে দু’টি বিষয়ে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু বিতর্ক শুরু হয় শিক্ষকদের বেতনক্রম দেখে। যেখানে লেখা হয়েছে, শিক্ষকদের প্রতিদিন ৫০ টাকা করে বেতন দেওয়া হবে। বিতর্ক উঠেছে সেখানেই।
এদিকে, বুধবার রাজ্যের শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাগণের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস’এর পক্ষ থেকে স্বচ্ছভাবে বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় শিক্ষক-শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মী নিয়োগ সহ শিক্ষা সংক্রান্ত নানা দাবিতে রাজ্যের নেতৃত্বস্থানীয় শতাধিক প্রধান শিক্ষক- শিক্ষিকা বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন।
বীরভূম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (উচ্চমাধ্যমিক) চন্দ্রশেখর জাউলিয়া বলেন, “গ্রামের দিকে স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষাদানের জন্য স্থানীয় ভিত্তিতে অনেকে স্কুলে স্বেচ্ছাশ্রম দেন। সেখানে টাকার বিষয়টি উল্লেখ না করলেই বিতর্ক হত না।” একই ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়ার খবর এসেছে জেলাগুলির বিভিন্ন স্কুল থেকে। কোথাও কনটিনজেন্সি ফান্ড থেকে কোথাও আবার ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগও উঠছে। আসলে শিক্ষকরা বদলি নেওয়ায় সমস্যায় বহু স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাই ক্লাস চালু রাখতে আপৎকালীন ব্যবস্থা।
[আরও পড়ুন: ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে রুপো লুট, হাওড়া থেকে গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত সিভিক ভলান্টিয়ার]
সাঁইথিয়া জিউই তরঙ্গিনী উচ্চবিদ্যালয়ে ৬৫০ জন ছাত্র। অনুমোদিত শিক্ষকের সংখ্যা ১৭ জন। প্যারাটিচার চার জন। কিন্তু রাজ্য সরকারের উৎসশ্রী প্রকল্পের সুযোগে শিক্ষকদের অনেকেই স্কুল ছেড়ে বাড়ির কাছাকাছি বদলি হয়ে গিয়েছেন। বিপাকে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। কারণ ছাত্রছাত্রীদের তো পড়াতে হবে। এসব ক্ষেত্রে স্থানীয় ভিত্তিতে অনেক স্কুল জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দপ্তরের অনুমোদন নিয়ে কিছু স্বেচ্ছাশ্রমের শিক্ষক নিয়োগ করে। জিউই উচ্চবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তেমনভাবেই শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে।
‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস’-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতি বলেন, “বহু স্কুলে এই ধরনের ঘটনা সামনে আসছে। অবিলম্বে আমাদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে শূন্যপদে স্থায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করতে হবে। শিক্ষাদপ্তর তথা রাজ্য সরকারকে আমাদের সমস্যার কথা দীর্ঘদিন ধরে আধিকারিকদের মাধ্যমে আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে আসছি। যদি শিক্ষা দফতর এবং রাজ্য সরকার আমাদের দাবিপূরণে সদর্থক ভূমিকা না নেয় তাহলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে আমরা বাধ্য হব।” তাঁরা শুক্রবার বিকাশ ভবনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান এবং বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেন।