সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘লাভ জিহাদ’ কী? আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে এর প্রাসঙ্গিকতাই বা কতটুকু? নেটিজেনদের এসব প্রশ্নের মুখে পড়তে হল জাতীয় মহিলা কমিশনের (NCW) চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে। তিনি নিজেই তার কারণ বলে বক্তব্য নেটিজেনদের। মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগৎ সিং কেশিয়ারির সঙ্গে দেখা করেন রেখা শর্মা। রাজ্যপালের কাছে তিনি নালিশ করেন, মহারাষ্ট্রে ‘লাভ জিহাদে’র (Love Jihad) ঘটনা বাড়ছে। এই বিষয়টি সামনে আসার পরই শুরু হয় বিতর্ক। এই শব্দবন্ধ নিয়ে আপত্তি তোলেন অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ, ‘লাভ জিহাদ’ শব্দের ব্যবহার সংবিধানবিরোধী। কারণ, ভারতীয় আইনে এই শব্দের কোনও অস্তিত্ব নেই। ফেব্রুয়ারিতেই একথা জানিয়েছিল সংসদ।
দু’দিনের সফরে দিল্লি থেকে মুম্বই গিয়েছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। মঙ্গলবার রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল তাঁর। সেইমতো রাজভবনে গিয়ে তিনি কথা বলেন ভগৎ সিং কেশিয়ারির সঙ্গে। ‘লাভ জিহাদ’ প্রসঙ্গ তুলে রেখা শর্মার দাবি, মহারাষ্ট্রের এই সমস্যা বাড়ছে। যদিও ভিন্ন ধর্মে বিবাহের সঙ্গে ‘লাভ জিহাদে’র পার্থক্য রয়েছে। তা সত্ত্বেও মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। এ বিষয়ে যাতে প্রশাসন নজর দেয়, রাজ্যপালের কাছে সেই আবেদন জানান রেখা শর্মা।
[আরও পড়ুন: দাউদ ইব্রাহিম ঘনিষ্ঠ ইকবাল মির্চির ২২ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি]
জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে বিষয়টি টুইট করতেই তৈরি হয় বিতর্ক। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কী এই ‘লাভ জিহাদ’? মহিলা কমিশনের প্রধানের কাছে এই শব্দের ব্যাখ্যা কী? হিন্দুত্ববাদীদের একাংশের ধারণা, কোনও হিন্দু বা ভিনধর্মের ব্যক্তির সঙ্গে কোনও মুসলিমের বিয়ে হওয়ার পর ধর্মীয় রীতি মেনে ইসলাম গ্রহণ করা আসলে ধর্মান্তকরণের একটা চাল, জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনেরও কি সেই একই মত? সেক্ষেত্রে তাঁর বিশ্বাসের সঙ্গে কাজের যোজন দূরত্ব রয়েছে। ওই পদের অযোগ্য রেখা শর্মা, এমন অভিযোগও তোলপাড় হয় নেটদুনিয়া।
[আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যু, আহত আরও অন্তত ৩৪]
আসলে সম্প্রতি বিখ্যাত গয়না প্রস্তুতকারী সংস্থা তানিষ্কের (Tanishq) একটি বিজ্ঞাপন ঘিরে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে ‘লাভ জিহাদ’ বিতর্ক। ভিনধর্মের শ্বশুরবাড়িতে এক হিন্দু বধূর সাধভক্ষণের অনুষ্ঠান ঘিরে বিজ্ঞাপন নিয়ে হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ অভিযোগ তোলে, তাতে ‘লাভ জিহাদ’-এর মতো বিষয়কে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এত সমালোচনার মুখে পড়ে বিজ্ঞাপনটি তুলে নেয় টাটা গোষ্ঠী। কিন্তু তারপরও বিতর্ক থামেনি। এবার জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের আলোচনার প্রসঙ্গে এই শব্দ ফের বিতর্কের ঝড় তুলল।