অর্ণব দাস, বারাসত: নাচের দলে কাজ করে অনেক বেশি টাকা উপার্জন করা যাবে। এমনই প্রলোভন দেখিয়ে সপ্তম শ্রেণির তিন ছাত্রীকে ভিন রাজ্যে পাচারের (Trafficking) ছক কষা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশি তৎপরতায় পাচারের আগেই বানচাল ছক। নিখোঁজ তিন ছাত্রীকে উদ্ধার করল অশোকনগর (Ashoknagar) থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে তিন নাবালিকাকে কলকাতার ঠাকুরপুকুর এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়। তার পর তাদের সিডব্লিউসিতে (Child Welfare Committee) পাঠানো হয়। সিডব্লিউসির (CWC) মাধ্যমে তিন নাবালিকাকেই হোমে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার হওয়া বছর তেরোর তিন নাবালিকার বাড়ি অশোকনগর থানার গুমা এলাকায়। গত মঙ্গলবার থেকে তাদের খোঁজ পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও কারওই হদিশ পাওয়া যায়নি। এদিকে, একই পাড়ার তিন নাবালিকার এক সঙ্গে নিখোঁজ হওয়ায় খবর জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।
[আরও পড়ুন: কৈশোর থেকে মায়ের প্রেমিকের যৌন নির্যাতন! থানায় FIR কলেজ ছাত্রীর]
এর পর বৃহস্পতিবার নিখোঁজ তিন নাবালিকার পরিবার আলাদাভাবে থানায় অভিযোগ জানায়। তদন্ত শুরু করলে পুলিশ জানতে পারে, নিখোঁজ তিন নাবালিকার মধ্যে একজন তার বাবার মোবাইল নিয়ে গিয়েছিল। রাতেই সেই মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ জানতে পারে, নিখোঁজ তিনজনই রয়েছে কলকাতার হরিদেবপুর থানার ঠাকুরপুকুর (Thakurpukur) এলাকায়। এদিন ভোরে পুলিশ সেখানে পৌঁছে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তিনজনকেই উদ্ধার করে। যদিও বাড়ির মালিককে তখন পাওয়া যায়নি।
তিনজনকে উদ্ধারের পর পুলিশ জানতে পারে, তাদের নাচের দলে যোগ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়েছিল এলাকারই এক নাবালিকা। সে বলেছিল, ভিন রাজ্যে নাচের অনুষ্ঠান করে অনেক বেশি টাকা রোজগার করা যাবে। আর এই ফাঁদে পা দিয়েই মঙ্গলবার বাড়ি ছেড়েছিল সপ্তম শ্রেণির তিন ছাত্রী। সেই নাবালিকার সঙ্গে বেরিয়ে তারা ঠাকুরপুকুরে গিয়ে পৌঁছেছিল।
[আরও পড়ুন: জয়নগরে সিভিক ভলান্টিয়ারের রহস্যমৃত্যু, বাড়ির অদূরে মিলল দেহ, খুনের অভিযোগ পরিবারের]
প্রাথমিক তদন্তে ওই তিন নাবালিকাকে ভিন রাজ্যে পাচারের ছক ছিল বলে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তার আগেই অবশ্য তিন নাবালিকাকে উদ্ধার করে অশোকনগর থানার পুলিশ। ঠাকুরপুকুরে যে বাড়িতে তিনজনকে রাখা হয়েছিল এবং যার মদতে তিন নাবালিকাকে ঠাকুরপুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।