অর্ণব আইচ: পুজোর (Durga Puja 2021) সময় রাতের সরকারি বাসের ভাড়া দিতে নারাজ হন দলে থাকা বেশ কিছু তরুণ-তরুণী। তাই রাতে বাস চালাতে চান না ‘ভুক্তভোগী’ কিছু বাসকর্মী। এমন পরিস্থিতি যাতে না হয় তাই এই বছর আগাম কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে লালবাজার (Lalbazar)। রাত দশটার পর থেকে পুলিশকে চলন্ত সরকারি বাসের উপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, এই ব্যাপারে আগেই CSTC ও ট্রাম কোম্পানির কাছ থেকে অভিযোগ এসেছে। পরিবহণ কর্মীদের হেনস্তা করার অভিযোগ উঠছে। পুজোর সময় বেশি রাত পর্যন্ত বাস চালানো হয়। দেখা গিয়েছে, বেশি রাতে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে বেশ কিছু তরুণ-তরুণী, যাঁরা দল বেঁধে থাকেন, তাঁরা বাসের ভাড়া দিতে রাজি হন না। ভাড়া চাইলে কনডাক্টর বা পরিবহণ কর্মীদের সঙ্গে তাঁরা গোলমালও করেন। সেই কারণে সিএসটিসি ও সিটিসির বাসের কর্মীরা অনেক সময় বাস চালাতে রাজি হন না।
পুলিশের এক কর্তা জানান, সব যাত্রী এমন, তা বলা যাবে না। কিন্তু এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়, যে তরুণ ও তরুণীরা একসঙ্গে কোনও স্টপেজ থেকে দল বেঁধে ওঠেন, তাঁদের মধ্যেই। এমনও দেখা গিয়েছে যে, ওই যাত্রীদের মধ্যে অনেকে মদ্যপ অবস্থায় থাকেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই আবার ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে দুই বা তিনটি স্টপেজে যাতায়াত করেন। কিন্তু ভাড়া চাইতে গেলেই সরকারি বাসের কর্মীদের রীতিমতো হেনস্তা করেন তাঁরা। এই অভিযোগও এসেছে যে, ওই বিনা ভাড়ার যাত্রীদের ধরতে গিয়ে বিষয়টি গালিগালাজ, বচসা থেকে শুরু করে ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ও চলে যায়।
[আরও পড়ুন: কালীপুজোয় রাজ্যে বাজি নিষিদ্ধ করার দাবি, হাই কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা]
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, সরকারি বাসের কর্মীদের এই ধরনের হেনস্তা করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু বহু যাত্রীই পুজোর সময় বেশি রাতে এই অপরাধ করে পালিয়ে যায়। এই অপরাধ রুখতে এবার কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে পরিবহণ আধিকারিক ও কর্মীদের। পুলিশ জানিয়েছে, এই ব্যাপারে লালবাজারের পক্ষ থেকে পুজোর সময় কলকাতা পুলিশের ওয়্যারলেস টহলদার গাড়ি, থানার গাড়ি ও রাস্তায় পিকেটে থাকা পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের সতর্ক করা হয়েছে।
টহলদার ওয়্যারলেস গাড়ির দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাত দশটা থেকে যতক্ষণ সরকারি বাস চলবে, ততক্ষণ যেন চলন্ত অবস্থায় বাসগুলির উপর নজর রাখা হয়। বাসে কোনও গোলমাল বা যাত্রীদের সন্দেহজনক আচরণ চোখে পড়লেই যেন পুলিশ বাসটিকে থামিয়ে কনডাক্টর ও চালককে সাহায্য করেন। একইভাবে কোনও সমস্যায় পড়লে যদি পুলিশ পিকেট বা থানার টহলদার গাড়ি দেখে বাসকর্মী চেঁচিয়ে সতর্ক করেন, সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই ক্ষেত্রে অভিযুক্ত যাত্রীদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।