স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার (Kolkata Book Fair) ভবিষ্যৎ কী? করোনা পরিস্থিতিতে সোমবার রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ লাগু হওয়ার পর থেকে সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে বইপ্রেমী থেকে শুরু করে প্রকাশক, সকলের মনে। তবে এখনই বইমেলা নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তার কথা বলতে নারাজ বইমেলার আয়োজক পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড (Publishers & Booksellers Guild)। বরং নির্ধারিত দিনেই বইমেলা হওয়া নিয়ে আশাবাদী গিল্ডের কর্তারা। তাই একদিকে তাঁরা রাজ্য সরকারের নির্দেশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে, জোরকদমে চালিয়ে যাচ্ছেন বইমেলার প্রস্তুতি।
গত বছর নভেম্বরেই ঘোষণা হয়েছিল, ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। সেন্ট্রাল পার্ক মেলা প্রাঙ্গণে তা চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। কিন্তু রবিবার রাজ্যে ফের কড়া বিধিনিষেধের ঘোষণার পর থেকেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে বইমেলার ভবিষ্যৎ নিয়ে। যেখানে শেষকৃত্যে ২০ জনের বেশি এবং সামাজিক বা বিবাহ অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি মানুষের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেখানে লক্ষাধিক মানুষের জনসমাগম হওয়া কলকাতা বইমেলা কী করে নির্ধারিত দিনে হওয়া সম্ভব, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
[আরও পড়ুন: ‘প্রমাণ সঠিক নয়, মুকুল রায় দলবদল করেননি’, বিধানসভার অধ্যক্ষকে জানালেন আইনজীবীরা]
পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বইমেলা নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তাকে আমল দিতে চাইছেন না। যেহেতু, রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জারি রয়েছে, তাই এখনই আশা ছাড়তে রাজি নন তিনি। ত্রিদিববাবুর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘অনিশ্চয়তার কিছু নেই। নির্ধারিত দিনে বইমেলা হওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। রাজ্য সরকার এবং স্বাস্থ্য দপ্তর যেমনভাবে বলবে, যে বিধি মেনে করতে বলবে, সেই বিধি মেনেই বইমেলা হবে।’’
এই সময়কালে বইমেলার প্রস্তুতির দিকেই নজর দিচ্ছেন গিল্ডের কর্তারা। এমনকী, ৪৫তম বইমেলার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশকেও প্রস্তুতির কাজ সেরে রাখতে বলা হয়েছে গিল্ডের তরফে। ত্রিদিববাবু বলেন, ‘‘আমরা আত্মবিশ্বাসী, বইমেলাটা ঠিকঠাক করতে পারব। আমাদের কাজ প্রস্তুতিটা সেরে রাখা। সেটাই করছি। বাংলাদেশকেও বলা হয়েছে সব প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।’’
[আরও পড়ুন: করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, বন্ধ হোক গঙ্গাসাগর মেলা, হাই কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা]
বইমেলার দিন ঘোষণার পর থেকেই প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছিল গিল্ড। কোভিডবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে বইমেলা আয়োজনের দিকে নজর ছিল প্রথম থেকেই। সে কারণেই কমানো হয়েছে স্টলের মাপ। পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলেন, ‘‘বইমেলার প্রাথমিক কাজগুলো আমাদের করে যেতে হবে। বইমেলার ম্যাপ তৈরি হয়ে গিয়েছে। প্রকাশকদের স্টল বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতিটি স্টলের আয়তন ৩০-৩৫ শতাংশ কমিয়ে মেলাপ্রাঙ্গণে ফাঁকা জায়গা বাড়িয়েছি। আমরা বইমেলা করার জন্য প্রস্তুত। এখন অপেক্ষা সরকার ও স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশের।’’
এবছর ৬০০টির বেশি বইয়ের স্টল ও ২০০টির বেশি লিটল ম্যাগাজিনের স্টল হচ্ছে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায়। মেলাপ্রাঙ্গণে সেগুলির তৈরির কাজ ১৫ জানুয়ারির পরই শুরু হবে।