সুকুমার সরকার, ঢাকা: জ্বর-সর্দি-কাশি-মাথা ও গলা ব্যথার ঊপসর্গ নিয়ে পরীক্ষায় গেলেই ফল আসছে কোভিড (COVID)। উদ্বেগ বাড়িয়ে রাজধানী ঢাকায় করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ৬৯ শতাংশের শরীরে ওমিক্রন স্ট্রেন পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
[আরও পড়ুন: বিশ্বের দুর্নীতি বিরোধী সূচকে একধাপ এগোল বাংলাদেশ, তবে সামগ্রিক উন্নতি অধরাই]
সম্প্রতি এক গবেষণা প্রতিবেদনে সংস্থাটির হাতে এ তথ্য এসেছে। এদিকে দেশে ক্রমে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা সোমবার দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৩৩ জন। মৃত ১৮। যা গত বছরের জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত বছরের জুলাইয়ে একদিনে ১৬ হাজার ২৩০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনায় এ পর্যন্ত দেশে ২৮ হাজার ২৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লক্ষ ১৫ হাজার ৯৯৭ জনে। মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এদিকে করোনা মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে সবাইকে ভ্যাকসিন গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “যাঁরা টিকা নেননি, তাঁরা দ্রুত টিকা নিয়ে নেবেন। আমরা স্কুলের ছাত্রছাত্রীদেরও টিকা দেয়া শুরু করেছি। টিকা নিলে অন্তত পক্ষে প্রাণ বাঁচবে।” প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, “ওমিক্রন দ্রুত ছড়াচ্ছে। আমি সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিধিনিষেধ মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে কিছু নির্দেশ দিয়েছি সেই নির্দেশগুলি সবাই মেনে চলবেন।
আইসিডিডিআরবি ঢাকার ৭৭টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা করে। এর মধ্যে পাঁচজনের ওমিক্রন শনাক্ত হয়। বাকিরা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন। চলতি মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে ৩৭৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৬৯ শতাংশ। গবেষণা সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশে প্রথম আলফা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। এটি মার্চ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। মার্চে প্রথম বেটা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। মে মাস নাগাদ বেটা ভ্যারিয়েন্ট আলফার জায়গা দখল করে। মে মাসে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের পরে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত এটি ভয়াবহ রূপ নেয়। গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশে ওমিক্রন হানা দেয়। ডিসেম্বরেই এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ওমিক্রনে আক্রান্ত ২৯ জন রোগীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে আইসিডিডিআরবি। এদের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও ১৬ জন নারী। তাদের মধ্যে ২৭ জনের সংক্রমণের উপসর্গ ছিল না। ২৪ জন ২ ডোজ এবং ৩ জন ১ ডোজ টিকা নিয়েছেন। একজনকে একদিনের জন্য হাসপাতালে ভরতি হতে হয়েছিল। একজন সৌদি আরব থেকে দেশে এসেছেন। বাকিরা কেউ বিদেশে ভ্রমণ করেননি। সারা দেশে নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৬৩ জনের শরীরে অমিক্রন শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৫২ জন ঢাকা মহানগর এলাকার। আটজন চট্টগ্রামের এবং তিনজন যশোরের।