সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মহামারীতে আক্রান্ত, অথচ টিকা নেওয়া মানেই আরও ‘বিষ’প্রয়োগ। এমনই ধারণা বদ্ধমূল উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh)বারাবাঁকির সিসাউদা গ্রামের বাসিন্দাদের। আর সেই ধারণা থেকে তাঁরা যা করলেন, তা যেমন আকস্মিক, তেমনই উদ্বেগজনকও। গ্রামবাসীদের করোনা টিকা দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের অভিজ্ঞতাও হল ভিন্ন। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিকা নেবেন না বলে গ্রামের সবাই মিলে ঝাঁপ দিলেন নদীতে! কারণ, তাঁরা মনে করেন, ‘বিষ’ ইঞ্জেকশন নেওয়ার চেয়ে নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়াও ভাল।
করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ রুখতে চলতি বছরের গোড়া থেকে দেশে শুরু হয়েছে গণ টিকাকরণ। মাঝে টিকা সংকটের জেরে গতি কমেছে। ইতমধ্যে ২০ কোটি মানুষকে দেওয়া হয়েছে করোনা ভ্যাকসিন(Corona vaccine)। যেখানে টিকারই আকাল, সেখানে তা নষ্ট হওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক। অথচ উত্তরপ্রদেশের সিসাউদা গ্রামে তেমনটাই হল। স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীদের ভ্যাকসিন দিতে। ছিলেন মহকুমাশাসকও। সবাইকে বুঝিয়ে বিনামূল্যে সরকারের তরফে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরিকল্পনাই সার। বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ আলাদা। দেখা গেল, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে টিকা নিতে কেউ তো রাজি হলেনই না, উলটে তাকে ‘বিষ ইঞ্জেকশন’ বলে ভয়ে দূরে সরে গিয়ে সটান নদীতে ঝাঁপ দিলেন!
[আরও পডুন: কোভিডবিধি ভেঙে বিমান ভরতি অতিথির উপস্থিতিতে বিয়ে মাদুরাই দম্পতির, ভাইরাল ভিডিও]
তবে তার আগে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অবশ্য গ্রামবাসীদের করোনা টিকার গুরুত্ব বোঝানোর চেষ্টা হয়। এমনকী পলায়নরত গ্রামবাসীদের ধরতে রীতিমতো দৌড়ঝাঁপ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। ২০০ জন গ্রামবাসী একসঙ্গে ঝাঁপ দিলেন সরযূ নদীতে। আবারও বোঝা গেল, একুশ শতকের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ আত্মনির্ভর ঠিকই, তবে অগ্রগতির দিক থেকে নয়, বরং বিপরীতমুখে। তবে এই কাহিনীর সবটাই এত হতাশাজনক নয়। ১৪ জনকে টিকা দিতে সক্ষম হয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু ১৩০ কোটির দেশে এই হার এবং এই চিত্র কি আদৌ বিন্দুমাত্র আশার কিরণ দেখা যায়? এই প্রশ্নের উত্তর মেলে সহজেই।