অভিরূপ দাস: করোনার তৃতীয় ঢেউ সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে শিশুদের উপর। ইতিমধ্যেই এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সেই কারণেই সংক্রমণকে গোড়া থেকে ঠেকাতে কোমর বেঁধে কাজে নেমেছেন বিজ্ঞানীরা। শিশুদেরও যাতে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়, সে প্রস্তুতিই শুরু হয়েছে। সেই লক্ষ্যে এবার কলকাতায় ভারতের তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শুরু হতে চলেছে শিশুদের উপর।
জাইডাস ক্যাডিলার (Zydus Cadila) টিকা জাইকোভ ডি। হায়দরাবাদের সংস্থার তৈরি এই কোভিড টিকারই ট্রায়াল হবে শিশুদের উপর। পূর্বভারতে একমাত্র কলকাতাতেই নয়া এই ভ্যাকসিনেন পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে ১২ বা তার বেশি বয়সের বাচ্চাদের উপর। পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ এই উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ১০০ জনের উপর এই টিকার ট্রায়াল হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কড়া বাধানিষেধের মধ্যে কীভাবে বাচ্চাদের এক জায়গায় এনে টিকার পরীক্ষা সম্ভব, তা নিয়ে। মারণ ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে এমনিতেই আতঙ্কিত অভিভাবকরা। তাছাড়া সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ স্কুলের পঠনপাঠনও। বাড়ি বসেই লেখাপড়া করছে কচিকাঁচারা। এমন পরিস্থিতিতে তাদের উপর টিকার ট্রায়াল অত্যন্ত কঠিন চ্যালেঞ্জ।
[আরও পড়ুন: কোভিডযুদ্ধে এগোচ্ছে বাংলা, রাজ্যে নিম্নমুখী দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা]
সমস্যা মেটাতে ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থের তরফে পার্ক সার্কাসের তিনটি স্কুলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ডা. জয়দীপ চৌধুরী ও ডা. মঞ্জুশ্রী চক্রবর্তী মিলে দুই সদস্যের টিম স্কুলগুলিকে রাজি করানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁদের আবেদন, যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীর বাড়ি পার্ক সার্কাসের আশপাশেই, তারা যদি ট্রায়ালে সম্মতি দেয়, তাহলে দ্রুত এই প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে পায়ে হেঁটেই ট্রায়াল কেন্দ্রে পৌঁছে যেতে পারবে তারা। স্কুলগুলি সবুজ সংকেত দিলেই শুরু হবে ট্রায়াল।
উল্লেখ্য, গোটা দেশের ১৫০০ বাচ্চা এই টিকার (Corona Vaccine) ট্রায়ালে অংশ নিয়েছে। প্লাজমা DNA বেসড এই টিকাটিই প্রথম ভারতীয় ভ্যাকসিন, যা শিশু অর্থাৎ ১৮ বছরের নিচের বয়সিদের উপর প্রয়োগ সম্ভব। এই সংস্থাই করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও রেমডেসিভির ওষুধও বানিয়েছিল। গবেষকদের দাবি, জাইকোভ ডি’র পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এখনও পর্যন্ত টিকাটির কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের মতো এটি দু’টি নয়, তিনটি ডোজের টিকা। ৩টে ডোজ নেওয়ার একমাস পর এর কার্যকারিতা ৯৩ শতাংশ বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ভ্যাকসিনটি ২-৮ ডিগ্রির মধ্যে রাখা যাবে। সর্বোচ্চ ২৫ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে জাইকোভ ডি।