মলয় কুণ্ডু: টিকাকরণ (Vaccination) রাজ্যের অগ্রাধিকার। আবার করোনা নিয়ন্ত্রণেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা অত্যন্ত জরুরি। দুটি বিষয়ে সমান গুরুত্ব দিয়ে এগোতে চাইছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের মানুষকে দুটি ভাগে ভাগ করে দ্রুত টিকাকরণ সেরে ফেলার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে খবর। সাময়িক বিধিনিষেধের জন্য টিকাকরণের ক্ষেত্রে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে শনিবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়। এ নিয়ে যাতে অযথা আশঙ্কা তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করে তাঁর বক্তব্য, “টিকাকরণ অগ্রাধিকার। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করে বন্ধ করাও জরুরি। আমাদের দুটি বিষয়কেই মেলাতে হবে। আমরা সেই চেষ্টাই করছি।”
নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সংখ্যক টিকা (Corona Vaccine) আসছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তা সত্ত্বেও টিকা মেলার উপর নির্ভর করে দ্রুত টিকাকরণ করতে চায় রাজ্য সরকার। তার জন্য রাজ্য ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির এক্সিকিউটিভ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের মানুষকে দুটি ক্ষেত্রে ভাগ করে কাজ করার জন্য। প্রথমটি সাধারণ মানুষের জন্য। তাঁদের টিকাকরণের বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের হাসপাতাল এবং সিএমওএইচদের। দ্বিতীয় ক্ষেত্রে রয়েছেন সুপার স্প্রেডার্স বা যাঁদের প্রতিনিয়ত জনসাধারণের মধ্যে গিয়ে কাজ করতে হয় বা মানুষের কাজ করার জন্য যাঁদের এই পরিস্থিতির মধ্যে যেতে হচ্ছে। এঁদের জন্য রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট দপ্তর জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে টিকাকরণের ব্যবস্থা করবে।
[আরও পড়ুন: চুলোয় যাক সংক্রমণ, আগে সুরা চাই! নিষেধাজ্ঞা জারি হতেই মদের দোকানে উপচে পড়া ভিড়]
দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কারা রয়েছেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট গাইডলাইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ভোটের কাজ করতে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই সরকারি ও আধা-সরকারি কর্মী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের টিকাকরণের কাজ প্রায় হয়ে গিয়েছে। বাকি যেটুকু অংশ রয়েছে তাঁদেরও দ্রুত টিকাকরণ শেষ করতে চায় রাজ্য সরকার। এছাড়াও এই ভাগে রয়েছেন জরুরি পরিষেবা ও পণ্যের সঙ্গে যুক্ত যেমন, রেশন ডিলার, কেরোসিন ও এলপিজি ডিলার এবং পেট্রোল পাম্পের স্টাফেরা। এই দ্বিতীয় ক্ষেত্রে রয়েছেন ট্যাক্সি, অটো, টোটো চালক, রিকশাচালকের মতো পরিবহনকর্মীরা। সাংবাদিক, আইনজীবী, মুহুরি, ল ক্লার্ক এবং আদালতের কর্মী, হকার, খবরের কাগজ বিক্রেতা, তরিতরকারি, মুদিখানার কর্মী, মাছ বিক্রেতা এবং বাজারের খুচরো দোকানদার, যৌনকর্মী এবং রূপান্তরকামী, কোভিড ভলান্টিয়ার্স, সংশোধনাগারে থাকা বন্দিরাও এই দ্বিতীয় ভাগে পড়ছেন। এই ভাগে যাঁরা রয়েছেন তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য ভান্ডার তৈরি করে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় টিকাকরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে নবান্ন সূত্রে খবর।