ধীমান রায়, কাটোয়া: করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের তীব্র সংকটের মুখে পড়েছে দেশ। এবার আসন্ন তৃতীয় ঢেউ। তার মোকাবিলায় এখন থেকেই প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে তৎপরতা। তবে সরকারের পাশাপাশি এই যুদ্ধে আগে থেকেই শামিল হয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার (Katwa) বাসিন্দা আনজাম হোসেন ওরফে ডেভিড মিঞা। অক্সিজেন সংকট এবার যাতে কারও প্রাণহানির কারণ না হয়ে দাঁড়ায়, তার জন্য আস্ত টোটো অ্যাম্বুল্যান্সের রূপ পেয়েছে। প্রায় লাখ টাকা খরচ করে সেই টোটোরূপী আ্যম্বুলেন্স শনিবার তিনি তুলে দিলেন কাটোয়া পুরসভার হাতে।
আনজাম হোসেনের এহেন অভিনব উদ্যোগের তারিফ করেছেন কাটোয়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন,”আনজাম হোসেন নামে ওই ব্যক্তি পুরসভার কাছে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা তা গ্রহণ করেছি। টোটোটি মূলত রোগীদের আ্যম্বুল্যান্স (Ambulance) পরিষেবার মতন কাজে লাগানো হবে।বিশেষ করে কোভিড পরিস্থিতিতে কাজে আসবে।”
[আরও পড়ুন: মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়ে TMC নেতাকে ‘মারধর’, কাঠগড়ায় BJP]
কিন্তু কেন টোটোকে আ্যম্বুল্যান্সে বদলে দেওয়ার ভাবনা এল ডেভিড মিঞার মাথায়? আনজাম হোসেনের কথায়,”আমাদের কাটোয়া শহরে লোকালয়ের মধ্যে এমন অনেক অলিগলি রাস্তা রয়েছে, যেসব রাস্তায় চারচাকা গাড়ি ঢোকে না। ফলে ওইসব পাড়ার রোগীদের চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে প্রচণ্ড সমস্যা হয়। অনেকটা সময় নষ্ট হয়। মূলত সে দিকটাই মাথায় রেখে টোটোর মধ্যে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” কাটোয়া শহরের বাগানেপাড়ার বাসিন্দা আনজাম হোসেন। বনেদি পরিবার। তিন ভাই, বাবা মা, স্ত্রী, সন্তান রয়েছেন বাড়িতে। এলাকায় পরোপকারী বলে সুনাম রয়েছে তাঁর। তিনি বলছেন, “করোনার প্রথম বছরে মানুষ কর্মহীন হয়ে অর্থাভাবে ভুগেছিলেন। বহু পরিবার কাজ হারিয়ে আধপেটা খেয়ে দিন কাটিয়েছেন। এ বছর দ্বিতীয় ধাক্কার সময় দেখতে পেয়েছি তীব্র অক্সিজেন (Oxygen) সংকটে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। অক্সিজেন নিয়ে কালোবাজারি হয়েছে। তাই তৃতীয় ঢেউ আসার আগে বিশেষ করে অক্সিজেন পরিষেবার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা প্রয়োজন।”
[আরও পড়ুন: ফের রাজ্যে বেআইনি Covid Vaccine ক্যাম্পের পর্দাফাঁস, গ্রেপ্তার খোদ স্বাস্থ্যকর্মী]
কীভাবে তৈরি হল তাঁর টোটো (Toto) অ্যাম্বুল্যান্স? জানা গিয়েছে নতুন একটি টোটো কিনে তার মধ্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার, স্ট্রেচার ইত্যাদির ব্যবস্থা করে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের মতন গড়ে তুলেছেন। আনজাম জানান খরচ হয়েছে ৯৮ হাজার ৬৫৩ টাকা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে আনজাম হোসেনের দেওয়া নতুন এই ‘টোটো অ্যাম্বুল্যান্স’ পরিষেবা পেতে মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকবে। সেখানে ফোন করেই মানুষ পরিষেবা পাবেন।