শেখর চন্দ, আসানসোল: ফের অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জামিনের আবেদন খারিজ। তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ আদালতের। সিবিআই আইনজীবীকে বিচারক সরাসরি প্রশ্ন করেন, গত ১৪ দিনে তদন্তের কী ডেভেলপমেন্ট হয়েছে? তখন সিবিআই জানান ইতিমধ্যেই এই মামলায় অনুব্রত মণ্ডল গ্রেপ্তার হয়েছে। তাই তদন্তের অগ্রগতি হবে। অনুব্রতর গ্রেপ্তারির কারণ দেখিয়েই সায়গলের জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই।
আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা প্রশ্ন তোলেন, মামলায় চার্জশিট জমা পড়ে গিয়েছে। তারপরও সাইগলকে ৭০ দিন ধরে আটকে রাখা হচ্ছে। কিন্তু কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। জামিনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের বহু মামলার রেফারেন্স টেনে আনা হয় সওয়াল জবাবে। অভিযুক্তর আইনজীবী এদিন দাবি করেন, গরুপাচার তখনই বলা হয় যখন গরু সীমান্ত পেরিয়ে যায়। এখানে কাস্টমসে কোনও এফআইআর হয়নি। অথচ সাইগল হোসেনকে গরুপাচারে জড়িত হিসেবে দেখানো হচ্ছে। অথচ কোনও আন্তর্জাতিক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার না করে শুধুমাত্র বীরভূম জেলা কয়েকজনকে টার্গেট করা হচ্ছে। কারা কোথায় কত টাকা পেয়েছেন সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। যে উত্তরপ্রদেশে গরুর হাট বসে সেখানে আজ পর্যন্ত সিবিআইয়ের বুকের পাটা হয়নি অভিযান চালানো বা কাউকে গ্রেপ্তার করার। এ নিয়ে সরগরম হয়ে ওঠে এজলাস। এদিন সাইগল হোসেনের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল ফরেন্সিকে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক আর অনুব্রত মণ্ডলের বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল নিয়ে ১৯ তারিখ হবে শুনানি।
[আরও পড়ুন: একাধিকবার তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ! চাঞ্চল্যকর দাবি সৌগত রায়ের]
গরু পাচার মামলায় গত ৮ আগস্ট সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। এই নিয়ে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে গরু পাচার মামলায় তিনটি চার্জশিট জমা পড়েছে। চার্জশিটে নাম ছিল বিকাশ মিশ্র, সায়গল হোসেন ও আবদুল লতিফের। মোট ৪১ পাতার চার্জশিট আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে জমা দেওয়া হয়। চার্জশিটে তিনজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৪২০, ১২০/বি, ১০৯ নম্বর ও পিসি আইনের ৭, ১১, ১২, ১৩/১/বি, ১৩/১/ডি ও ১৪/বি নম্বর ধারা দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত এই মামলায় যে তিনটি চার্জশিট জমা পড়েছে, তাতে মোট ১১ জনের নাম আছে।
বিকাশ মিশ্র ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছে। এদিন সায়গল হোসেনের জেল হেফাজতে থাকা ৭০ দিন পূর্ণ হল। ইলামবাজারের গরু কারবারী আবদুল লতিফ এখনও গ্রেপ্তার হয়নি। প্রথম চার্জশিটে নাম ছিল বিএসএফ কমান্ডেন্ট সতীশ কুমারের। ৩২ দিন জেল হেফাজতে থাকার পর তিনি জামিনে মুক্ত হন। এরপর দ্বিতীয় চার্জশিটে নাম ছিল গরু পাচারকারীর মূল কিং পিন এনামুল হকের। ১৩ মাস জেল হেফাজতের পর সেও এখন জামিনে মুক্ত। এবার নাম আসে এই তিনজনের।