সুকুমার সরকার, ঢাকা: শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় বাংলাদেশের গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস-সহ চারজনকে ছমাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এবার ইউনুসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়েই আপিল করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মহম্মদ খুরশিদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মহম্মদ রাশেদ জাহাঙ্গিরের স্বাক্ষরিত রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে ইউনুসের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা আপিল বিভাগে যাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি ড. মহম্মদ ইউনুসের গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টকে ৫০ কোটি টাকা জমা দিয়ে ২০১১ থেকে ২০১৩ করবর্ষের আয়কর আপিল দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। গত ২৮ জানুয়ারি আদালতে উপস্থিত হয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় শ্রম আপিল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেছিলেন ইউনুস ও গ্রামীণ টেলিকমের অপর তিন আধিকারিক। সেই আবেদন খারিজ করে এদিন রায় দেয় হাইকোর্ট।
[আরও পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিস্ফোরণ, মৃত্যু ৪ শিশুর, নাশকতা নাকি দুর্ঘটনা?]
এনিয়ে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার তাহমিনা পলি জানান, ২০২০ সালে নভেম্বরে ২০১১ থেকে ২০১৩ দুই বছরে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা আয়কর দাবি করে গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্টকে নোটিস পাঠায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। এর পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে গ্রামীণ কল্যাণ ট্রাস্ট অর্থ নেই বলে মকুব চায়। ওই আবেদন এনবিআর প্রত্যাখ্যান করে। তখন তাদের একটি অ্যাকাউন্টেই প্রায় ৩৫০ কোটি থেকে ৪০০ কোটি টাকার মতো ছিল। ফলে অ্যাকাউন্টে অর্থ রয়েছে জানিয়ে এনবিআর অর্থ চেয়ে নোটিস পাঠায়। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম সেই নোটিস চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে। এর পর গত তিন বছরে বিভিন্ন আদালত ঘুরে মামলাটি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে আসে। সেটির শুনানি শেষে গ্রামীণ টেলিকমের রিট আবেদন খারিজ করে আদালত। সেই সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমকে আদেশ দেন নিয়ম অনুযায়ী দাবি করা আয়করের ২৫ শতাংশ টাকা আগে জমা দিয়ে এর পর এনবিআরের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করতে।
এদিকে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলা অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জানিয়ে রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজাররিক বলেছেন, কাজের মাধ্যমে ইউনুস রাষ্ট্রসংঘের প্রিয় বন্ধু। তাঁর কর্মকেই অনুসরণ করে বর্তমানে উন্নয়নের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে রাষ্ট্রসংঘ। তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ মতপ্রকাশের কারণে বাংলাদেশে যাঁদের আটক করা হয়েছে অব্যাহতভাবে তাঁদের মুক্তি দাবি করে রাষ্ট্রসংঘ।