সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে তোলাবাজি মামলায় বড় স্বস্তি পেলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত। সোমবার সেই নির্দেশ খারিজ করে দেওয়া হল কর্নাটক হাই কোর্টের তরফে। আদালত জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বিরুদ্ধে এখনই তদন্ত শুরু করা যাবে না।
জনাধিকার সংঘর্ষ সংগঠনের তরফে আদর্শ আয়ার নামে এক ব্যক্তির করা আবেদনে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ ছাড়াও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা, কর্নাটকের বিজেপি নেতা নলীন কুমার কতিল এবং বি ওয়াই বিজয়েন্দ্রর বিরুদ্ধে। আবেদনে বলা হয়েছে, কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে চাপের কৌশল হিসাবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) অভিযানের ভয় দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনতে বাধ্য করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই নির্মলার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেয় বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত। এরপরেই গত শনিবার তিলকনগর থানার পুলিশ নির্মলা ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। সেই নির্দেশের পালটা আবেদন জানানো হয় কর্নাটক হাই কোর্টে। সোমবার মামলার শুনানিতে সেই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়ে দিল কর্নাটক হাই কোর্ট।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনী বন্ড প্রকল্পকে 'অসাংবিধানিক' বলে ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত। এবং স্টেট ব্যাঙ্ক ও নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয় বন্ড কেনাবেচা সংক্রান্ত সব তথ্য প্রকাশ করার। ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরেই বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছিল এসবিআই। জানা গিয়েছে, বন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি আয় করেছে বিজেপি (BJP)। ৬৯৮৬.৫ কোটি টাকা পড়েছে গেরুয়া শিবিরের তহবিলে। নির্বাচনী বন্ড বাতিল এবং এই বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি কত আয় করেছে- দুটি বিষয়কে হাতিয়ার করে লোকসভা নির্বাচনের আগে সুর চড়িয়ছে বিরোধী দলগুলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পালটা তাদের তোপ দেগে বলেছিলেন, ”নির্বাচনী বন্ড থেকে আয়ের ৬৩ শতাংশই গিয়েছে বিরোধী দলগুলোর কাছে। ৩৭ শতাংশ অর্থ পেয়েছে বিজেপি। তাহলে বিরোধীরা কেন আমাদের দিকে আঙুল তুলছে?” নির্বাচনী বন্ড বাতিল নিয়ে একদিন সকলে আফসোস করবেন বলেও মতপ্রকাশ করেন তিনি।
এদিকে বিরোধীদের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, মূলত তিন ধরনের উপায়ে নির্বাচনী বন্ডে টাকা তোলা হয়েছে। যেখানে বরাত পাইয়ে দিয়ে। ইডি, আয়কর বিভাগ ও সিবিআই অভিযানের ভয় দেখিয়ে। এবং সংস্থার পক্ষে অনুকুল নীতি তৈরি করে। তবে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ ওঠে একাধিক সংস্থাকে ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লোকসভা ভোটের আগে বলেছিলেন, "নির্বাচনী বন্ড আদৌ কোনও স্বচ্ছতার কর্মসূচি নয়, বরং বিশ্বের সবচেয়ে বড় তোলাবাজির চক্র। আর নরেন্দ্র মোদি তার মাস্টারমাইন্ড।"