সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটের তাগিদে এতদিন একসঙ্গে দফায়-দফায় আলোচনা করেছেন। প্রচার করেছেন। তবে আট বছরে এবারই প্রথম একসঙ্গে পথে হাঁটল বাম-কংগ্রেস।
বাম-কংগ্রেসের যৌথ মিছিলে পতাকার রং আলাদা। স্লোগানের সুরও আলাদা। কিন্তু পথ এক। উদ্দেশ্যও এক। মিছিলে জাতীয় পতাকাও ছিল। ছিল দেশের সংবিধানের ছবি সহ বড় পোস্টার। মিছিল শেষে মহাজাতি সদনের সামনে দুই দলের নেতারা একযোগে জানিয়েছেন ৮ জানুয়ারি ধর্মঘটের সমর্থনে স্ট্রাইক কমিটি গড়ে তোলা হবে। পুলিশ মিছিল ভাঙতে এলে দায় রাজ্য সরকারের।
এনআরসি, সিএএ বিরোধী বাম-কংগ্রেসের মিছিল সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শুরু হয় বেলা তিনটে নাগাদ। মিছিলের সামনের অংশ যখন মহাজাতি সদনে পৌঁছল, বাকি অর্ধেক তখনও চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে মেডিক্যাল কলেজ পৌঁছয়নি। বস্তুত মধ্য কলকাতা অচল করে মিছিল থেকে বারবার বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী স্লোগান উঠেছে।
[ আরও পড়ুন: পা পিছলে কুয়োয় অসুস্থ যুবক, ৪ ঘণ্টাতেও উদ্ধারে ব্যর্থ বিপর্যয় মোকাবিলা দল ]
চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে মিছিল যখন বিজেপির রাজ্য দপ্তরের সামনে আসে তখন দুই দলের স্লোগান তুঙ্গে। ম্যাটাডোর থেকে মুহুর্মুহু বিজেপি বিরোধী স্লোগান উঠছে। তবে পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। দ্রুত মিছিলের সামনের অংশকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সিপিএম-কংগ্রেস-সহ ২০টি বামপন্থী দলের মিছিলে সব দলেরই পতাকা ছিল। ছিল ‘নো এনআরসি’, নো ক্যা’ লেখা প্ল্যাকার্ড পোস্টার, ফেস্টুন। একই মিছিল। মিছিলের সামনের সারিতে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের পাশাপাশি পথ চলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বিধায়ক অসিত মিত্রর মতো কংগ্রেস নেতারা।
মহাজাতি সদনের সামনে সংক্ষিপ্ত সভায় সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র যেমন বলেছেন, “৮ জানুয়ারি হরতালের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ড ও পঞ্চায়েতে স্ট্রাইক কমিটি গড়ে তুলতে হবে। সবার্ত্মকভাবে বনধের সমর্থনে প্রচার করতে হবে। যে কোনওভাবেই এই হরতালকে সমর্থন করতে হবে। কারণ কেন্দ্রকে বুঝিয়ে দিতে হবে দেশের মানুষ সংশোধিত নাগরিকপঞ্জী আইন মানছেনা।” একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ দেখছেন। উনি বুঝতে পারছেন না। ঝাড়খণ্ড-সহ প্রায় সব রাজ্যেই গ্রহণের কবলে পড়েছে বিজেপি। ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়বে। সমাবেশে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেছেন, “এতদিন আলোচনা হয়েছে। একসঙ্গে ভোটও করা হয়েছে। কিন্তু এবারই প্রথম পথে নামা হল বামেদের সঙ্গে। তাই কলকাতার মধ্যে এই যৌথ মিছিলকে আটকে না রেখে গোটা রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ছড়িয়ে দিতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী এই লড়াইয়ে নিচুতলার বাম-কংগ্রেসের পাশাপাশি আরও সবাইকে যুক্ত করতে হবে।”
বস্তুত, সমাবেশের শুরু থেকে শেষ বাম নেতৃত্বের পাশে ছিলেন সোমেন মিত্র। বলেছেন, “৮ জানুয়ারি ধর্মঘট হবেই রাজ্যে। পুলিশ যদি মিছিল ভাঙতে চায়। দায় রাজ্য সরকারের।” সমাবেশ সিপিআই রাজ্য সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়, ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায়, পিডিএস নেতা সমীর পতুতন্ডু-সহ বাম নেতারা বক্তব্য রাখেন। বিতর্কের চাপে নকশালপন্থী সিপিআইএমএল (লিবারেশন) ও কংগ্রেসের সঙ্গেই মিছিলে পা মিলিয়েছেন।
[ আরও পড়ুন: জল জমা রাস্তায় গর্তে বাইকের চাকা, দুর্ঘটনায় মৃত্যু আরোহীর ]
The post নির্বাচনের পরও জোটবদ্ধ কর্মসূচি, NRC-CAA’র বিরোধিতায় মহামিছিল বাম-কংগ্রেসের appeared first on Sangbad Pratidin.