রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: মুখে বললেও মাঠে যৌথ আন্দোলনে নেই বাম-কংগ্রেস। কংগ্রেসের (Congress) সঙ্গে যৌথ আন্দোলনে কি অনীহা আলিমুদ্দিনের! জনসমর্থন হারিয়ে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া কংগ্রেসের উপর কি নির্ভরশীলতা কি কমাতে চাইছে বঙ্গ সিপিএম (CPM)? বাম শিবিরের অন্দরে এখন এই প্রশ্নটাই ঘোরাফেরা করছে। সূত্রের খবর, কংগ্রেসের সঙ্গে আপাতত যৌথ আন্দোলনে না গিয়ে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে দলের একক শক্তিটা যাচাই করে নিতে চাইছে সিপিএম নেতৃত্ব।
চাকরি প্রার্থীদের সমর্থনে আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়াতে সিপিএমকে যৌথ আন্দোলনের প্রস্তাব দিয়েছিল কংগ্রেস। এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বয়ং প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি (Adhir Ranjan Chowdhury)। অধীরের সেই প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে সায়ও দিয়েছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম (Mahammad Selim)। কিন্তু কংগ্রেসের সেই প্রস্তাবে সায় জানালেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। সাড়া মেলেনি সিপিএমের তরফে। রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন, আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ আন্দোলনে কি দূরত্বই রাখতে চাইছে সিপিএম নেতৃত্ব?
[আরও পড়ুন: জেলা ভাঙার প্রতিবাদ, ‘মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হোক’, দাবি বিজেপি বিধায়কের]
নিয়োগ দুর্নীতির মতো হাতেগরম ইস্যুতে কলকাতায় তিনটি বড় মিছিল করেছে বামেরা। তাছাড়া, সিপিএমও একাধিক কর্মসূচি নিচ্ছে এই ইস্যুতে। কংগ্রেসের তরফেও থানা ঘেরাওয়ের মতো আলাদা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। বাম-কংগ্রেসের আলাদা আলাদা কর্মসূচিই হচ্ছে। তাহলে কি নির্বাচনী সমঝোতা ছাড়া বাংলায় অন্যান্য আন্দোলনের ক্ষেত্রে কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে আগ্রহী নয় আলিমুদ্দিন? এমনই প্রশ্ন বাম শিবিরের অন্দরেও।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেছিলেন, “ভোট শেষ। জোট শেষ।” কংগ্রেসের সঙ্গেAdhir Chowdhury শুধু নির্বাচনী সমঝোতা ছিল বামেদের। তাই কি ভোটের সময় ছাড়া বাকি আন্দোলনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বিষয়টি এড়িয়ে চলতে চাইছে আলিমুদ্দিন। যদিও সিপিএমের একাংশের কথায়, এই রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতাতেও তো সাফল্য আসেনি। আবার কংগ্রেস নিয়ে সিপিএমের নরম মনোভাবে দ্বিধাবিভক্ত বাম দলগুলিও।
[আরও পড়ুন: আজ রাজ্যের মন্ত্রীদের শপথগ্রহণ, বাদ পড়ছেন এঁরা! নতুন মুখ কারা?]
ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপির মতো বামফ্রন্টের শরিক নেতারা মনে করছেন, বিজেপিকে আটকাতে কংগ্রেসের উপর নির্ভরশীলতা বন্ধ করা উচিত। কারণ, নানা রাজ্যে একের পর এক নির্বাচনে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া কংগ্রেসকে মানুষ আর গ্রহণ করছে না। সিপিএম-কংগ্রেস প্রীতি নিয়ে ক্ষুব্ধ এসইউসিআইও। আবার এ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের জোটের প্রবল বিরোধী সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের নেতারাও। ফলে, এসব কারণেই যৌথ আন্দোলনে আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলছে আলিমুদ্দিন।